ফ্রিল্যান্সিংয়েংর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন ও প্রিমিয়াম সফটওয়্যার দেয়ার নামে প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) একটি দল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা পূর্ব থানাধীন ৬ নম্বর সেক্টর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- শামীম আহম্মেদ (৩২), জাহিদুল ইসলাম (২৪), মাহিদুল হক ওরফে মাহাদী (৩০), মো. আশরাফুল ইসলাম (২৬), এহসান মাশফী (২৪) ও রনি সরদার (২৮)।
তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ছয়টি এসএসডি কার্ড, চারটি হার্ডডিস্ক, চারটি ট্যাব, একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে।
এটিইউ জানায়, আপস্পট অ্যাকাডেমি নামের একটি প্রতিষ্ঠান ফেসবুক পেজে ঘরে বসে প্রথম দিন থেকেই দৈনিক ১০ থেকে ৪০ ডলার আয় করার প্রলোভন দেখিয়ে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দেয়। তার সাথে বিভিন্ন ফেইক ভিডিও রিভিউ ও পোস্ট করা হয়।
প্রতিষ্ঠার দুই বছরে আপস্পট অ্যাকাডেমি সিপিএ মার্কেটিংয়ের ওপর ১৫৬টি ব্যাচের ট্রেনিং দেয় যার প্রতিটিতে প্রায় ৩০০ জন করে অংশগ্রহণকারী ছিল। এভাবে প্রতারণামূলকভাবে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে তারা কোটি কোটি টাকা আয় করলেও প্রশিক্ষণার্থীরা তাদের দেওয়া প্রশিক্ষণ থেকে তেমন কিছুই আয় করতে পারেনি।
এটিইউ বলছে, এ ছাড়া প্রিমিয়াম টুলস দেয়ার নামে ২৫০০ টাকার অফারের মাঝে কেউ প্রথমে পুরো টাকা না দিয়ে আংশিক পেমেন্ট করলে তাকে অনলাইন ক্লাস থেকে ব্লক করে দেয়া হয় এবং সেই প্রদত্ত টাকা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আর ফেরত দেয়া হওয়া না। এর মাধ্যমেও তারা হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।
ভুক্তভোগীরা জানান, কোর্স সমাপ্ত হওয়ার পর সিপিএ মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে তাদের সাহায্য করার কথা থাকলেও আপস্পট অ্যাকাডেমি থেকে পরবর্তী সময়ে তারা কোন ধরনের সেবা পান না। এসব বিষয়ে ভুক্তভোগীরা মেসেজ বা হটলাইনে আপস্পট অ্যাকাডেমির সাথে যোগাযোগ করেও কোন ধরনের সাড়া পায় না। অনেক ক্ষেত্রে তাদেরকে ব্লক করে দেয়া হয়। অর্থাৎ ফ্রিলান্সিংয়ের কোর্স পরিচালনার আড়ালে তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হল প্রিমিয়াম সফটওয়্যার দেয়ার কথা বলে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়া।
আপস্পট একাডেমির সিপিএ মার্কেটিং কোর্সের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়া ভুক্তভোগীদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে যার সদস্য সংখ্যা প্রায় এক হাজারের ওপরে।
এটিইউ আরও জানায়, রাহিম মন্ডল নামে একজন ভুক্তভোগীর অভিযোগ পাওয়ার পর আশুলিয়া থানায় মামলা হয়। পরে নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে আসামিদের অবস্থান শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়।