বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুই সপ্তাহ ধরে গৃহহীন পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা

  • রহমত উল্লাহ, টেকনাফ   
  • ২০ জানুয়ারি, ২০২৪ ০৯:৪৮

পুড়ে যাওয়া ঘরের পাসে বসে বৃদ্ধা সোয়া বানু বলেন, ‘কোনো শীতবস্ত্র নেই। খাবার নেই। মাথা গোঁজার ঠাঁই জোটেনি আজও। দিনে পোড়া ঘরের ওপর বসে থাকছি, রাত হলে অন্যের বাড়ি ঘুমাই।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-৫) আগুনের ঘটনা ঘটে। ওই সময় তাৎক্ষণিকভাবে ২০টি ঘর পুড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়।

ক্যাম্পের প্রধান মাঝি হামিদ হোসাইন জানান, ৬ জানুয়ারি রাতের ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পরবর্তী সময় আগুনে পোড়া ঘরের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১০০ তে। এতে গৃহহীন হয়ে পড়ে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা।

তিনি বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্তদের মাথা গোঁজার ঠাঁই মেলেনি এখনও। তীব্র শীতে খোলা আকাশের নিচে তারা মানবেতর দিন পার করছেন।’

এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত শীতবস্ত্র ও আশ্রয় চান ক্ষতিগ্রস্তরা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে আশ্রয়শিবির ঘুরে দেখা যায়, ত্রিপলের ছাউনিতে বসে আছেন নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। ছাউনির চারদিক ফাঁকা। তীব্র শীতে সেখানে বসে কাঁপছেন তারা।

পুড়ে যাওয়া ঘরের পাশে বসে বৃদ্ধা সোয়া বানু বলেন, ‘কোনো শীতবস্ত্র নেই। খাবার নেই। মাথা গোঁজার ঠাঁই জোটেনি আজও। দিনে পোড়া ঘরের ওপর বসে থাকছি, রাত হলে অন্যের বাড়ি ঘুমাই।’

পাশেই ত্রিপলের ছাউনি তৈরি করেছেন নুর নাহার।

তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে খুব ঠান্ডা লাগছে। ছোট কম্বলে কাজ হচ্ছে না। ছাউনি দিয়ে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এভাবে আর কতদিন থাকতে হবে জানি না।’

কুতুপালংয়ের ৫ নম্বর ক্যাম্পের প্রধান মাঝি হামিদ হোসাইন বলেন, সেদিন রাতে একটি ঘরে আগুন পোহাচ্ছিলেন কয়েকজন। সেখান থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে ১৫ থেকে ২০টি ঘরে আগুন লাগে। পরে সেটা ছড়িয়ে প্রায় ১১০০ ঘরবাড়ি পুড়ে যায় ওই ঘটনায়।’

তীব্র শীতে রোহিঙ্গাদের খুব কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকে সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। শিশুদের কষ্ট হচ্ছে বেশি।’

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রণয় রুদ্র বলেন, ‘শীতে নারী-শিশুরা ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, সর্দি-জ্বর-কাশিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে আসা প্রত্যেককে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা নয়ন বলেন, ‘আগুনে পুড়ে গৃহহীন রোহিঙ্গাদের ঘর মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া তাদের নিয়মিত খাবার দেয়া হচ্ছে এবং সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে।’

এর আগে ৬ জানুয়ারি রাতে কক্সবাজারের উখিয়ায় কুতুপালং ৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ ব্লকের সাব ব্লক এ/৮ তে আগুন লাগে।

ওই সময় ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. ইকবাল জানান, আগুনে তাৎক্ষণিকভাবে ১৫ থেকে ২০টি ঘর পুড়ে যাওয়ার খবর এসেছে। পরদিন ভোরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর