দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ। এবার সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের পালা। সংসদ অধিবেশন শুরুর পর ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে তফসিল এবং মার্চ মাসে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে এ ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত হবেন দুজন নারী এমপি। এ দুই আসনের জন্য মনোনয়ন পেতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন চট্টগ্রামের অন্তত এক ডজনেরও বেশি নেত্রী। উচ্চ পর্যায়ে চেষ্টা তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন তারা; অনেকেই এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। আনুকূল্য পেতে শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি মন্ত্রী-এমপিদের কাছেও তারা ধরনা দিচ্ছেন। কেউ কেউ দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন।
মনোনয়ন দৌঁড়ে থাকা নেত্রীদের মধ্যে সাবেক নেতা-এমপিদের স্ত্রী-কন্যারাও রয়েছেন; রয়েছেন বিভিন্ন পেশায় প্রতিষ্ঠিত নারীরাও।
জানা গেছে, দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের ভোটে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১০ জন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন।
ইসি সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংসদ সচিবালয়ের পাঠানো ভোটার তালিকা অনুযায়ী এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এবার সর্বোচ্চ ১০টি সংরক্ষিত আসন পেতে যাচ্ছেন।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ৬৮ জন নেত্রী দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। এদের মধ্যে দুইজনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সারের মেয়ে ওয়াসিকা আয়শা খান ও প্রয়াত সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। তবে সনি এবার ফটিকছড়ি আসন থেকে সরাসরি ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।
এবার মনোনয়নপত্র যারা দৌঁড়ে রয়েছেন তাদের মধ্যে এবারও রয়েছেন আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান। মন্ত্রিসভা গঠনের আগেও তার নাম আলোচনায় ছিল।
ওয়াসিকা আয়েশা খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন সবসময় সততার তা সঙ্গে পালনের চেষ্টা করেছি। আবারও সুযোগ পেলে ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী যে সিদ্ধান্ত নেন, সেটাই চূড়ান্ত। তার বাইরে কিছু নেই।’
ওয়াসিকা ছাড়াও চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সহধর্মিণী হাসিনা মহিউদ্দিন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক কাউন্সিলর জোবাইরা নার্গিস খান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের মা অ্যাডভোকেট কামরুন নাহার, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চেমন আরা তৈয়ব, সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী দিলোয়ারা ইউসুফ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বাসন্তী প্রভা পালিত, প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মোছলেম উদ্দিন আহমদের স্ত্রী শিরিন আহমদ, ডা. আফসারুল আমীনের স্ত্রী কামরুন নেছা, সুচিন্তা ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী, উত্তর জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট জুবাইদা সরোয়ার নিপা, সাবেক চসিক কাউন্সিলর রেখা আলম চৌধুরী ও আনজুমান আরা বেগম মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন।
সুচিন্তা ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আদর্শায়িত সৈনিক। একজন নারী হয়ে জঙ্গিবাদ দমনে, মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়ানো, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জঙ্গিবাদে না জড়ানোর শপথসহ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার কাজ করে আসছি। আমাকে এই গুরুদায়িত্ব দিলে মেধা ও শ্রম দিয়ে দেশের জন্য কাজ করব।’