ঝালকাঠি সদরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বাসায় স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
এ ঘটনায় শিরিন নামের এক নারীকে আটক করেছে বাহিনীটি।
প্রাণ হারানো ৫০ বছর বয়সী রিপন মল্লিক ঝালকাঠি পৌর এলাকার ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
রিপনের প্রতিবেশী সৌদি আরব প্রবাসী কামাল হোসেনের স্ত্রী শিরিন আক্তারের ঘরে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটে বলে জানান ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসএম আল আমিন।
ওই নারীর সঙ্গে রিপন মল্লিকের বিয়ে-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় অনেকে।
পুলিশ, স্বজন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কৃষ্ণকাঠি মল্লিক বাড়ির বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা রিপন মল্লিক প্রায়ই সৌদি প্রবাসী কামালের স্ত্রী শিরিন আক্তারের ঘরে আসা-যাওয়া করতেন। শিরিনের ছেলে ইমন হোসেন গত চার দিন আগে ঢাকায় যায়। শিরিন ঘটনার দিন তার ঘরে একা ছিলেন।
প্রতিবেশী হারিছ হোসেন বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিরিন তার ঘরের ভেতর থেকে ডাক-চিৎকার দিচ্ছিল। ওই সময় আমিসহ আশপাশের মানুষ ঘরে ঢুকে দেখি রিপন মল্লিক অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় মেঝেতে পড়েছিল। সবাই মিলে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানের ডাক্তার জানান, রিপন মারা গেছে। তারপর আমরা রিপনের মরদেহ তার বাড়িতে পাঠিয়ে দিই।’
রিপনের ভাই সমির মল্লিক বলেন, ‘আমাকে স্থানীয়রা ফোনে জানায়, আমার ভাইকে মেরে মাথা ফাটিয়েছে। তারপর আমি শিরিনের ঘরে এসে দেখি মেঝেতে রক্ত লেগে আছে। আর আমার ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। তখন শিরিন তার ঘরেই বসা ছিল।’
শিরিন আক্তারের বোনের ছেলে লিয়ন হোসেন বলেন, ‘আমার খালা-খালু রিপন মল্লিকের কাছ থেকে জমি কিনেছে। সেই সুবাদে রিপন মল্লিক আমার খালার বাসায় আসা-যাওয়া করত।
‘রিপন মল্লিকের সঙ্গে তার ভাই সমীর মল্লিকের জমি নিয়ে চাপা বিরোধ ছিল, তবে ঘটনার দিন কেন রিপন মল্লিক খালার ঘরে আসছে, তা আমাদের জানা নেই।’
ঝালকাঠি সদর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মুহিতুল ইসলাম বলেন, ‘মরদেহের সুরতহাল শেষে প্রাথমিকভাবে যেটি বোঝা গেছে, তা হলো এটি হত্যাকাণ্ড। যেই নারীর ঘরে হত্যা করা হয়েছে, সেই নারীর সঙ্গে রিপন মল্লিকের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল বলেও তথ্য পেয়েছি।
‘আমরা শিরিন নামের ওই নারীকে আটক করেছি। আর রিপনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’