ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বিভিন্ন জায়গা থেকে ককটেলসদৃশ ৬টি বস্তু উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ২টা এবং শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে পৃথক স্থান থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
ককটেল পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ।
প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে এ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে মোট ছয়টি ককটেল পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে লালন শাহ হলের পকেট গেট সংলগ্ন এলাকায় দুইটি ককটেল সদৃশ্য বস্তুর দেখা মিললে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে রাতেই ইবি থানা পুলিশ সেগুলো উদ্ধার করে। এরপর সকালে জিয়া হলের সামনে একটি, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনের পাশে দুইটি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ইন্টারন্যাশনাল ব্লকের সামনে একটি ককটেল সদৃশ বস্তু পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে সবগুলোই নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।
এ ঘটনায় পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পরিপূর্ণভাবে ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর আগেই এমন ঘটনায় আতঙ্কিত অধিকাংশ শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘গভীর রাতে গোয়েন্দা বাহিনীর মাধ্যমে তথ্যটি জানতে পারি। এখন পর্যন্ত ছয়টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। ইবি থানা পুলিশের সহায়তায় সবগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। ক্যাম্পাস খোলার পরই এমন ঘটনা আতঙ্কজনক। আমি মনে করি এটা কোনো রাজনৈতিক ইস্যুকেন্দ্রিক ঘটনা নয়। তবে যেটাই হোক, কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা শনাক্তে গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে।’
ইবি থানার ওসি মামুনুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে মিটিং শেষ হয়েছে। প্রশাসনের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী তল্লাশি করা হবে। যেহেতু দৃশ্যমান স্থানে এসব বস্তু পাওয়া গেছে এবং একটারও বিস্ফোরণ ঘটেনি, সুতরাং বিষয়টি সন্দেহজনকও বটে। তাই আগে-পরে ক্যাম্পাসে কোনো ঘটনা আছে কি না খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘ককটেল বিষয়টি আগ্নেয়াস্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই বিষয়টিকে ছোট করে দেখা যাচ্ছে না। ক্যাম্পাসে এ ধরনের বস্তু পাওয়া দুর্ভাগ্যজনক। নির্বাচনকেন্দ্রিক কারও কোনো নাশকতার ভাবনা থেকে থাকলে সবগুলো একজায়গায় থাকত। বিভিন্ন জায়গায় ফেলে রাখাটা উদ্বেগজনক। এখানে চলাচলকারী শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যেও এটা করা হয়ে থাকতে পারে।’
তিনি জানান, ইবি থানা ও প্রক্টরিয়াল বডিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে জিডি করা হবে।
এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে কি না- জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, ‘তা আমি ঠিক জানি না। তবে সারা বছর কমবেশি নিয়োগ বোর্ড থাকে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে ওটার সম্পৃক্ততা আছে কি না বুঝতে পারছি না। পুলিশ তদন্ত করলে অন্যান্য বিষয়গুলো বেরিয়ে আসবে।’