বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পরিবেশ রক্ষার বার্তা নিয়ে সাইকেলে ভারতের শিক্ষক বাংলাদেশে

  •    
  • ৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৩:০৩

২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর থেকে ১৪ সালের ১১ জুন পর্যন্ত সময়ে ভারতের সবকটি রাজ্যে বিশ্ব উষ্ণায়ণ নিয়ে প্রচার চালান তিনি। পরিবেশবান্ধব দু-চাকার বাই সাইকেল নিয়ে প্রচার চালাতে গিয়ে রামপ্রসাদকে দু-চাকার ভারত ভ্রমণকারী হিসেবে চেনেন কলকাতার মানুষ।

রামপ্রসাদ নস্কর। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগণার সোনারপুর থানার সুভাষ গ্রামের বাসিন্দা। পরের বাড়ির কেয়ারটেকার সন্ন্যাসী নস্করের দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে মেঝ ছেলে রামপ্রসাদ শ্রীপুর শিক্ষাসদন হাই স্কুলের পার্শ্ব শিক্ষক। পড়ান ভূগোল বিষয়ে। বেতন পান ৮ হাজার রুপি।

১৯৭৮ সালের ১৫ মার্চ জন্ম নেয়া রামপ্রসাদ দেড় বছর আগে বিয়ে করেছেন। দারিদ্রতার মাঝেও রামপ্রসাদকে ভারতের ২৯টি রাজ্যের কোনো না কোনো মানুষ চেনে। পরিবেশ আন্দোলনের প্রচারণা চালাতে গিয়েই পরিচিত পান তিনি।

২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর থেকে ১৪ সালের ১১ জুন পর্যন্ত সময়ে ভারতের সবকটি রাজ্যে বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে প্রচার চালান তিনি। পরিবেশবান্ধব দু-চাকার বাই সাইকেল নিয়ে প্রচার চালাতে গিয়ে রামপ্রসাদকে দু-চাকার ভারত ভ্রমণকারী হিসেবে চেনেন কলকাতার মানুষ।

এই রামপ্রসাদ সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রবেশের পর বুধবার সকালে সাইকেল নিয়ে পৌঁছেছেন উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁয়। বেলা ১১টার দিকে নওগাঁয় পৌঁছানোর পর রামপ্রসাদের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।

তিনি বলেন, আগে আমি পরিবেশ সচেতনতার পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব বাই সাইকেল চালানোর ওপর তরুণ যুব সমাজকে উৎসাহিত করতে ভারতের ২৯টি রাজ্যে প্রচার চালিয়েছি। বাংলাদেশের প্রচারাভিযানের মাধ্যমে বিদেশের জনগণকে প্রথম আমার মিশন-ভিশন জানাচ্ছি। সাইকেল নিয়ে একদিনই আমি ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারি। আমি তিন মাস বাংলাদেশে থাকব। চেষ্টা করব বাংলাদেশের বেশ কিছু অঞ্চল ঘুরে বেড়িয়ে মানুষকে সচেতন করতে।

রামপ্রসাদ নস্কর বলেন, বর্তমানে পরিবেশ বিপন্ন। মানুষের অসেচনতার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি।

সুন্দরবনের পরিবেশ নিয়ে রামপ্রসাদ বলেন, অনেক মানুষের মাথার চর্তুপাশে চুল থাকলেও মাঝখানে টাক থাকে। ঠিক তেমনি সুন্দরবনের চর্তুপাশে গাছ থাকলেও মাঝখানে বৃক্ষবিহীন মাঠ হয়ে গেছে। উপকূলবর্তী সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল তলিয়ে যাচ্ছে জলের তলায়।

উষ্ণায়নের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি দাবি করে তিনি বলেন, অতিরিক্ত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার, যথেচ্ছ বৃক্ষনিধন এবং বিভিন্ন প্রকার বায়ু দূষনের কারণে এবং সুন্দরবন সংলগ্ন নদীতে বিভিন্ন জলযান থেকে তেল পড়ে, ওই তেল অতি জোয়ারের সময় সুন্দরবনের ওপরে উঠে যাওয়ার পর দূষিত হয় বনভূমি। এতে মারা যায় গাছ। ওঠে না ঘাসও।

রামপ্রসাদ বলেন, এভাবে পরিবেশ ধ্বংস হতে থাকলেও মানুষের বাস করাই কষ্টকর হয়ে উঠবে। তাই দারিদ্রতার মাঝেও স্বল্প পুঁজি নিয়ে পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে কলকাতা থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত জেলা কক্সবাজারের টেকনাফ পর্যন্ত আমার ছুটে চলা।

তিনি আরও বলেন, পাহাড়ি অঞ্চল ও সমভূমি অঞ্চলে নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলার, ফলে নদীতে পাথরযুক্ত মাটি পড়ে নদীর নাব্যতা হ্রাস করছে। নদী অববাহিকায় গড়ে ওঠা কলকারখানার নোংরা জল ও আবর্জনা, বসবাসকারী মানুষের মল-মূত্র, বর্জ্যপদার্থ, চাষে ব্যবহৃত কীটনাশক, রাসায়নিক সার নদীতে মিশে গিয়ে নদীর জল দুষিত করছে। যাত্রীবাহী, মালবাহী জাহাজ, ভেসেল ইত্যাদি চলাচলের ফলে জলের সঙ্গে প্রতিনিয়ত মিশছে খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ, বর্জ্য পদার্থ, মল-মুত্র, প্লাস্টিক ব্যাগ, পোড়া তেল, মোবিল ইত্যাদি। ফলে চারিদিকে শুধু দূষণ আর দূষণ।

রামপ্রসাদ বলেন, দূষণের করাল গ্রাসে মানুষের অস্তিত্বের সংকট দেখা দিচ্ছে, বাস্তুতন্ত্র বিঘ্নিত হচ্ছে। সামুদ্রিক জীবজন্তু বিলুপ্তির পথে । কিন্তু একটু সচেতন হলে এই অমানবিক নদী দূষণের হাত থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি। তাই সবার মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বাইসাইকেল নিয়ে ঘুরে ঘুরে সবাইকে লিফলেট বিলি করছি। এছাড়া সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বাইসাইকেলের সামনে একটি সচেতনামূলক স্টিকার লাগিয়েছি। আমার এই সামন্য প্রচেষ্টায় আশা করছি একটু হলেও সবাই সচেতন হবেন।

এ বিভাগের আরো খবর