বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাউজানের ১৮১ প্রাথমিক স্কুলের মধ্যে ৮১টিতে নেই প্রধান শিক্ষক

  • এম. রমজান আলী রাউজান (চট্টগ্রাম)   
  • ১৪ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:৪২

বহুমুখী সংকটের মধ্যে সময় পার করছে রাউজানের প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এ উপজেলার ১৮১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৮১টিতে নেই প্রধান শিক্ষক। সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদ প্রায় অর্ধশত। চলতি অর্থবছরে আরও অনেক শিক্ষক অবসরে যাচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে। শিক্ষক সংকটের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংকট রয়েছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়েও। এখানে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার (এটিও) ৮টি পদের মধ্যে আছেন মাত্র ৩ জন। ৫ কর্মচারীর মধ্যে আছেন ৫ জন। রাউজানের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর বর্তমান অবস্থার খবর নিতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ব্যক্তিগত নাম ব্যবহারের কারণে উপজেলার ৮টি বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে। নানা সমস্যায় থাকা প্রাথমিক শিক্ষার হালচাল দেখতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে থাকা কয়েকটি বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকট। শিক্ষার্থীরা পাঠ নিচ্ছে বারান্দায় অথবা বেঞ্চে গাদাগাদি করে বসে। প্রধান শিক্ষক না থাকা বিদ্যালয়ে লক্ষ্য করা গেছে, বিশৃঙ্খল পরিবেশ। অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা মানছেন না বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময়সূচি। সাধারণ শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বললে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘরের মূল অভিভাবক না থাকলে যেমন হয় সেই অবস্থায় চলছে প্রধান শিক্ষকবিহীন বিদ্যালয়গুলো। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে এক সহকারীকে দেওয়া হলেও তার পক্ষে অন্য সহকর্মীদের শৃঙ্খলা দেখা সম্ভব হয় না। খবর নিয়ে জানা গেছে, রাউজানে যারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় আছেন তাদের মধ্যে বেশির ভাগ নারী শিক্ষক। তাদের প্রায় আশি শতাংশ থাকেন চট্টগ্রাম শহরে। এসব শিক্ষককে সকালে সংসারের কাজ গুছিয়ে বাসা থেকে বের হতে হয়। অনেক সময় রাস্তায় যানজটে পড়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে হয় বিলম্বে। এমন সমস্যার মধ্যে কিছু কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষক উপস্থিতি দেখা যায় ১০টার পর। আরও দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ সংকটে থাকা এমন অন্তত ৩০টি বিদ্যালয়ের পাশে নতুন ভবন নির্মাণকাজ অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কয়েকটির কাজ চালানো হচ্ছে ধীরগতিতে। কাজ বন্ধ হয়ে থাকা নির্মাণাধীন ভবন নিয়ে কথা বললে রাউজান উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এসব ভবন নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছিল। সেই সময় নির্মাণকাজ পেয়েছিল আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঠিকাদাররা। রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে তারা কাজ ফেলে এলাকা ছেড়েছেন। এখন তিনি পলাতক ঠিকাদারদের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে বিকল্প ব্যবস্থায় নির্মাণাধীন ভবনসমূহের কাজ শেষ করার ব্যবস্থা নিয়েছেন। ইতোমধ্যে বেশ কিছু ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করা হয়েছে। অন্যগুলো দ্রুত শেষ করতে পারবেন বলে তিনি দাবি করেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ ও নিজ কার্যালয়ে জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুন্নবী বলেন, চলতি অর্থবছরে আরও কিছু শিক্ষক অবসরে যাবেন। অতিদ্রুত শূন্যপদে শিক্ষক, কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অবশ্য এ কর্মকর্তা যোগ করেন জনবল নিয়োগ বিলম্ব হলে বিদ্যমান সমস্যা আরও বেড়ে যাবে। বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষকদের আসা-যাওয়ার নিয়ম না মানার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষকতায় থাকা বেশির ভাগ শিক্ষক শহরে থাকেন। বিভিন্ন সময় রাস্তায় যানজটে পড়তে হয়। তবে সকলকে সতর্ক করা হয়েছে যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়ে পৌঁছে পাঠদানে অংশ নেন। তিনি আরও বলেন, ৮টি বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্য ও তার পিতা-মাতার নামে নামকরণ করা সাতটিসহ-আটটি বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত পেলে কার্যকর হবে।

এ বিভাগের আরো খবর