বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৭ জানুয়ারি ফেলানী হত্যা দিবসে ভোট বর্জনের আহ্বান রিজভীর

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ২২:৪০

রিজভী বলেন, ‘অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে ১৫ বছর ধরে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবিধানকে দুমড়ে-মুচড়ে কাগজের নৌকা বানিয়েছেন। ভোটাধিকার হরণ করে দেশের জনগণকে রিফিউজ করেছেন। সংবিধানের ৭(ক)(২)(খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে দুবার রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত।’

আগামী ৭ জানুয়ারি নিষ্পাপ কিশোরী ফেলানী হত্যা দিবস উল্লেখ করে ওইদিন ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘আজ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসে এ বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ পর্যন্ত করেননি শেখ হাসিনা। ৭ জানুয়ারির ঐতিহাসিক রক্তাক্ত শোক দিবসে দেশপ্রেমিক জনগণ কোনো নির্বাচন হতে দেবে না।’

বুধবার বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে ১৫ বছর ধরে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবিধানকে দুমড়ে-মুচড়ে কাগজের নৌকা বানিয়েছেন। ভোটাধিকার হরণ করে দেশের জনগণকে রিফিউজ করেছেন। সংবিধানের ৭(ক)(২)(খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে দুবার রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত। আগামী ৭ জানুয়ারি তথাকথিত একদলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে তৃতীয়বার রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করতে যাচ্ছেন তিনি। এবার নির্বাচন কমিশন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র-জনপ্রশাসন-আইন মন্ত্রণায়লসহ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাই অভিযুক্ত হবেন।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অবৈধ আদেশ পালনের কারণে সব পর্যায়ের কর্মকর্তারা আজ অভিযুক্ত। তিনি সরকারি চাকরিজীবীদের তার দুষ্কর্মের সহযোগী করেছেন। কঠিন শাস্তির খড়্গের তলে নিয়ে আসা নিশ্চিত করে ফেলেছেন। সামনের দিনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে তার সব সহযোগীর।’

বিএনপির জেষ্ঠ্য এ নেতা বলেন, ‘গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে সভা সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশদানের মাধ্যমে মূলত অঘোষিত জরুরি অবস্থা জারির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে; যা সংবিধানের ৩৭, ৩৮ ও ৩৯ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

‘প্রজাতন্ত্রের সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বলব- অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর অবৈধ আদেশ পালন থেকে আপনারা বিরত থাকুন। আপনারা একজন একনায়কের অবৈধ ক্ষমতার লিপ্সা চরিতার্থ করার সহযোগী হয়ে ১৮ কোটি জনগণের বিপক্ষে দাঁড়াবেন না। আগামী ৭ জানুয়ারির পূর্বনির্ধারিত ফলাফলের পাতানো নির্বাচনে কোনো সহযোগিতা করবেন না।’

তিনি বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর মহাসমাবেশের আগে ওবায়দুল কাদের হুমকি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন- ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের পরিণতি শাপলা চত্বরের চেয়েও ভয়াবহ হবে। ওবায়দুল কাদের তার সেই অগণতান্ত্রিক এবং বেআইনি হুমকি কার্যকর করেছিলেন। পোষ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে ‘গ্রেনেড বোমা’ হামলা চালিয়েছিলেন।

‘আওয়ামী অপশক্তি এখানেই থেমে থাকেনি। বিএনপিকে ফাঁসানোর জন্য আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল। নির্মমভাবে পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করেছিল। এভাবে একটি উদ্দেশ্যমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে উল্টো বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেই মামলা দিয়ে হয়রানি-গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ইচ্ছাকৃতভাবে দেশে একটি অরাজকতা সৃষ্টি করে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ওবায়দুল কাদেরের আগাম কথায় আশঙ্কা আরও বেড়েছে। তাদের গুপ্তবাহিনী নিজেরাই নিজেদের নৌকা, লাঙ্গল, পাগল, ট্রাক, ঈগল প্রার্থীদের হত্যা বা গুপ্তহত্যার পথও বেছে নিতে পারে। সুতরাং জনগণকে সতর্ক থাকতে হবে। সম্ভব হলে আওয়ামী অপকর্মের সাক্ষ্য প্রমাণ রেকর্ড করে রাখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধ করার হুমকি দিচ্ছে সরকারের মন্ত্রী এমপি ও আওয়ামী লীগের নেতারা। তাদের এ ধরনের বক্তব্য উদ্ভ্রান্তের প্রলাপ; দেশে ক্রমাগতভাবে তামশিকতা ঢোকার আলামত। গণতন্ত্রকামী জনগণের তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। কারণ আদিম অসভ্য অবস্থা দেশে টেনে আনতে চাচ্ছে সরকার। তাদের এ ধরনের চিন্তা ও অপতৎপরতা সংবিধানবিরোধী, আইনের শাসনের পরিপন্থি।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশ-বিদেশের গণতন্ত্রকামী শক্তিকে ধোঁকা দেয়ার জন্য শেখ হাসিনার স্বঘোষিত ডামি নির্বাচনে স্বতঃউচ্ছ্বসিত আনন্দ নেই। শুধুই মিথ্যার বঞ্চনা আর আত্মার লাঞ্ছনা, জনগণকে অপমান এবং মিথ্যার অবদান। এ অভিনব মডেলের নির্বাচন নিয়ে ঢাকডোল বাজানোর পর ভোটের তরী ডুবতে চলেছে। তাদের খুদ-কুঁড়ো উচ্ছিষ্টভোগী পার্টির প্রার্থীরা দলে দলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। নির্বাচনে কে আসল আর কে ডামি- এসব নিয়ে প্রার্থী-সমর্থকদের মধ্যে কামড়া-কামড়ি, সন্ত্রাস, সংঘর্ষ, হানাহানি ও খুনোখুনি চলছে। আওয়ামী অপশক্তি এখন নিজেরাই নিজেদের পাতা ফাঁদে আটকে, জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে বিএনপিকে নিষিদ্ধ করার হুঙ্কার দিচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ এ রাজনীতিক জানান, মঙ্গলবার দুপুর থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত বিএনপির ১৩৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ সময়ে ৬ মামলায় দলটির প্রায় ৬ শতাধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর