বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘নারায়ণ চন্দ্রকে ভোট না দিলে ভাতার কার্ড বাতিলের হুমকি’

  • প্রতিবেদক, খুলনা    
  • ৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ১১:৩২

খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনি এলাকায় ভোটের নামে সাম্প্রদায়িক অপপ্রচার শুরু করেছেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। তাকে ভোট না দিলে নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের মানুষ ডুমুরিয়া-ফুলতলায় টিকতে পারবে না বলে তিনি ভীতি ছড়াচ্ছেন। একই সঙ্গে জানতে পেরেছি, তার নির্বাচনি কোনো অফিস বা ক্যাম্পে ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে নাটকীয়ভাবে আমার কর্মীদের ওপর দোষ চালানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছে।’

‘নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে ভোট না দিলে তার অনুসারী চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড ও সরকারি সুবিধাভোগীদের কার্ড বাতিলের হুমকি দিচ্ছেন। ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিক, রাস্তার নগর কুলি, গ্রামপুলিশ, গ্রাম্য স্বাস্থ্যকর্মী, সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি সম্প্রদায়ের শিক্ষক, সরকারি মহিলাবিষয়ক কর্মীসহ বিভিন্ন সরকারি সুবিধাভোগীদের ওপরে চাপ প্রয়োগ করে তার পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করাচ্ছেন, যা নির্বাচনি আচরণবিধির সুনির্দিষ্টভাবে লঙ্ঘন।’

খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেন মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ তোলেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে। তারা দুইজনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা।

শেখ আকরাম বলেন, ‘নির্বাচনি এলাকায় ভোটের নামে সাম্প্রদায়িক অপপ্রচার শুরু করেছেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। তাকে ভোট না দিলে নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের মানুষ ডুমুরিয়া-ফুলতলায় টিকতে পারবে না বলে তিনি ভীতি ছড়াচ্ছেন।

‘একই সঙ্গে জানতে পেরেছি, তার নির্বাচনি কোনো অফিস বা ক্যাম্পে ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে নাটকীয়ভাবে আমার কর্মীদের ওপর দোষ চালানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছে।’

নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নারায়ণ চন্দ্র চন্দের পক্ষে কাজ করবে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এসএম কামরুজ্জামান, শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশীষ বিশ্বাস, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আশরাফ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন অফিসারের প্রত্যক্ষ মদদে বিতর্কিত পদ্ধতিতে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।’

তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপরোক্ত অফিসারসহ তার ভাইপো শিক্ষক দিবাশিষ চন্দসহ তার অনুসারী অনেক শিক্ষককে কাজে লাগিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা সরোয়ারকে কারচুপি করে জোরপূর্বক হারিয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

‘অনুরূপভাবে ২০২১ সালেও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান উপজেলা নির্বাচন অফিসার কল্লোল বিশ্বাস ও উপরোক্ত অফিসার ও সংসদ সদস্যের আজ্ঞা বাস্তবায়নকারী একটি বিশেষ গোষ্ঠীর শিক্ষকরা পক্ষপাতিত্ব করায় এবং সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দের নির্দেশনা পালন করায় ১৪টি ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থীদের মধ্যে ১২ জনই পরাজিত হন।’

খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেন অভিযোগ করেন, ‘বিদ্রোহী ও অন্য দলের চেয়ারম্যানদের নিয়ে নিজস্ব বলয় সৃষ্টির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় ওইসব নির্বাচনের বিতর্কিত ফলাফল ও নানা অসঙ্গতি নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা হয়েছে।

‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এসব কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রকার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ ভোটাররা আশঙ্কা করছেন এসব কর্মকর্তা নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকলে কোনোভাবেই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না বরং তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’

এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। তিনি বলেন, ‘এসব কথা তার (শেখ আকরাম হোসেন) মনগড়া। একটা সুস্থ নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য সে এসব বলছে।’

খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া ও ফুলতলা) আসনে নির্বাচনে লড়ছেন চারজন প্রার্থী, তবে মূল প্রতিযোগিতা হচ্ছে নৌকা প্রতীকের নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেনের।

আকরাম হোসেন ফুলতলা উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি ওই উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন। উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে খুলনা-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।

ঋণখেলাপি হওয়ার ঘটনায় রিটার্নিং অফিসার তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছিলেন। নির্বাচন কমিশন ও উচ্চ আদালতও তার মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। পরে চেম্বার জজ তাকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেয়।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি ২০০০ সালের ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে প্রথম সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন, তবে ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।

পরে ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচন থেকে ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত টানা তিনি জয়লাভ করেন। ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন সময়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

এ বিভাগের আরো খবর