বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জিয়া পরিবার খুনি, তাদের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক নেই: শেখ হাসিনা

  • প্রতিনিধি, মাদারীপুর ও কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ)   
  • ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২১:১১

কালকিনিতে নির্বাচনি জনসভায় শেখ হাসিনা তরুণদের প্রতি নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বাস করে, তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি। এ তারুণ্যকেই আমরা স্মার্ট তরুণ সমাজ হিসেবে তৈরি করতে চাই। দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়তে চাই।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান খুনি, খালেদা জিয়া খুনি, তারেক জিয়া খুনি। এসব খুনির পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এদেশের গণতন্ত্র নষ্ট করেছে। জনগণের ভোট চুরি করেছে। এদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নতি হবে না। বিপরীতে আওয়ামী লীগ সবসময় দেশের কল্যাণে কাজ করে এসেছে।’

শনিবার মাদারীপুরের কালকিনি এবং গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় পৃথক নির্বাচনি জনসমাবেশে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তিনি এ সময় তরুণ ভোটারদের কাছে নৌকা প্রতীকে ভোট চান।

কালকিনিতে সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে নির্বাচনি জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বাস করে, তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি। এ তারুণ্যকেই আমরা স্মার্ট তরুণ সমাজ হিসেবে তৈরি করতে চাই। দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়তে চাই।

‘যুব সমাজের জন্য কাজের ব্যবস্থা করেছি। দেশে একশ’ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছে সরকার। সেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হবে। কম্পিউটার ও ডিজিটাল ডিভাইস- এগুলোর ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হলো ২০৪১ সাল। এই ২০৪১ সালের মধ্যে দক্ষ জনশক্তি তথা স্মার্ট তরুণ সমাজ গড়ে তুলব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘টানা ১৫ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় বাংলাদেশে ধারাবাহিক একটা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এই উন্নয়ন হয়েছে। আওয়ামী লীগের উন্নয়ন প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও জেলা এমনকি তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা- মানুষের যা যা প্রয়োজন।’

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও নৌকা মার্কায় ভোট চান বঙ্গবন্ধু-কন্যা।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শনিবার উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনি জনসভায় উপস্থিত জনতার একাংশ। ছবি: নিউজবাংলা

তিনি মাদারীপুরের তিনটি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের উপস্থিত জনতার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনে নৌকার প্রার্থী শাজাহান খান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনে নৌকার প্রার্থী আ.ফ.ম বাহাউদ্দীন নাছিম, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ মাদারীপুর-১ আসনের নৌকার প্রার্থী নুর এ আলম চৌধুরী লিটন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাদারীপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন, শাহাবুদ্দিন ফরাজিসহ স্থানীয় নেতারা এই নির্বাচনি জনসমাবেশে বক্তব্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে দুপুরে কোটালীপাড়ার জনসভায় নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের দেখে নেয়ার হুশিয়ারি দেন।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি আগুন-সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়েছে। তারা বাস ও ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে; নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। যারা এসব করছে তাদেরকে ধরিয়ে দিতে হবে।’

শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া। শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ এই সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, ‘জাতির পিতা এই বাংলাদেশকে শুধু স্বাধীনতা এনে দেননি, মুক্তির পথও দেখিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। সেই বিচার বন্ধ করে দেয় জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করে তাদেরকে বিভিন্ন দূতাবাসসহ বড় বড় পদে চাকরি দিয়েছিল।

‘আমরা দুই বোন বিদেশে ছিলাম রিফিউজি হয়ে। আমাদের দেশে আসতে দেয়নি জিয়াউর রহমান। রেহানার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। জিয়াউর রহমান সেটি রিনিউ পর্যন্ত করতে দেয়নি।

‘আমি জিয়াউর রহমানের দেয়া ইনডেমনিটি বাতিল করে খুনিদের বিচার করেছি। ২০০৮ সালে বিচারের রায় কার্যকর করেছি। আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন বলেই আমি পেরেছি।’

নতুন ভোটারদের কাছে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রথমবারের ভোট যেন ব্যর্থ না হয়, বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে তারুণ্যের শক্তি কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে একটি উন্নত জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট বানিয়েছি। বিনা পয়সায় স্কুলে স্কুলে ল্যাব স্থাপন করে কম্পিউটার দিয়েছি। আমরা ৩ কোটি ৯৪ লাখ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দিচ্ছি। নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষকদের মর্যাদা দিয়েছি। বেতন বৃদ্ধি করেছি, প্রশিক্ষণ দিয়েছি।

কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছি। আমরা ভূমিহীনদের ২ শতক জমিসহ গৃহ নির্মাণ করে দিয়েছি, দেশের ৩৩টি জেলা ইতোমধ্যে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেছি। পর্যায়ক্রমে এই বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। আমরা পুরো দেশটাকে এগিয়ে নিতে চাই।’

কোটালীপাড়ার ভোটারদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই কোটালীপাড়ায় ৭৬ ও ৮৪ কেজি ওজনের দুটি শক্তিশালী বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল। সেদিন ওই বোমার বিষ্ফোরণ হলে কোটালীপাড়াবাসী নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত।

‘এতো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দেখতে পেলো না, একজন চায়ের দোকানদার কেটলি ধুইতে গিয়ে বোমার তার দেখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সংবাদ দিলেন। পরে বোমা উদ্ধার করা হয়। সেদিন আমাকে এবং কোটালীপাড়াবাসীকে আল্লাহই রক্ষা করেছেন। আমি সেই চায়ের দোকানদারের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আপনারা আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন তো? আপনারা আমার নির্বাচন করে দেন, আর আমাকে দেখতে হয় ৩০০ আসন। আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে কাজ করার সুযোগ করে দেবেন।’

কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, শেখ হাসিনার নিজ নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি ও সাবেক সিনিয়র সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাসসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

এ বিভাগের আরো খবর