চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মোতালেবের সমর্থক এক চেয়ারম্যানের বাড়িতে গুলিবর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিদোয়ানুল ইসলাম সুমনের ইছামতি আলীনগরের বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এ সময় দুর্বৃত্তরা স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেবের প্রচারকাজে নিয়োজিত একটি ভক্সি মাইক্রোবাস, একটি ড্যাম্পার পিকআপ, পুলিশ পরিবহনে নিয়োজিত একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ দুটি সিএনজি অটোরিকশা ও নির্বাচনি কার্যালয় ভাঙচুর করেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাত ১২টার পর ২৫-৩০ জনের একটি দল চেয়ারম্যানের বাড়িতে মুহূর্মুহু গুলি করতে থাকে। এ সময় দুর্বৃত্তরা তার ড্যাম্পার পিকআপটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি একটি ভক্সি মাইক্রোবাস ও ২টি সিএনজি অটোরিকশায় ভাঙচুর চালায় এবং নির্বাচনি কার্যালয়ে ভাঙচুর করে।
খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস, সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান, সাতকানিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউল ইসলাম, ঢেমশা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সৈয়দ ওমর ফারুকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এলাকাবাসী জানায়, দুর্বৃত্তরা চেয়ারম্যান সুমনের বাড়ি লক্ষ্য করে মুহূর্মুহু গুলি করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করেও গুলি করে। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশও পাল্টা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিদোয়ানুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘রিয়াদ-মিজান-তুর্কির নেতৃত্বে ২৫/৩০ জনের একটি দল আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার বাড়ি লক্ষ্য করে শতাধিক রাউন্ড গুলি চালিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান এমপি নদভী সাহেবের নামে স্লোগান দিতে দিতে পুলিশের উপস্থিতিতে গুলি করা হয়। এসময় পুলিশের গাড়িসহ চারটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে তারা। এ ছাড়াও সন্ত্রাসীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী এমএ মোতালেব সাহেবের নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর চালায়।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেবের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও সাতকানিয়া পৌর মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ‘মানুষের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য, নির্বাচন বানচাল করার জন্য এবং নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কমানোর জন্য নৌকার প্রার্থী আবু রেজা নদভী গত কয়েকদিন যে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। তারই বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে আজকের এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের মামলা হয়নি, আমরা তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসব।’
ঢেমশা পুলিশ ফাঁড়ির ওসি সৈয়দ ওমর ফারুকের গাফিলতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তদন্তে যদি সেও দোষী হয়, তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’