বিয়ের করার জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে নোটিশ পাওয়া টাঙ্গাইলের কালিহাতির সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ এবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন।
উপজেলার মগড়া গ্রামের সত্যপালের মেয়ে স্বর্ণা পালের সঙ্গে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে তার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
চলতি বছরের ২৬ জুলাই রনিকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে করতে নোটিশ দেন প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং নিউজবাংলাসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে খবরটি প্রকাশ হয়।
সে সময় নিয়মবহির্ভূত বিয়ের নোটিশ দেয়ায় বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হতে থাকে। এর পাশাপাশি আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও পাওয়া যায় ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
এ দুটি ঘটনাসহ অন্য অনেক কারণে প্রধান শিক্ষকের বহিস্কার চেয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সাবেক শিক্ষক ও স্থানীয়রা মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেন। বর্তমানে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক সরকারি তদন্ত চলমান।
এ বিষয়ে রনি প্রতাপ পাল বলেন, ‘কোনো চাপে নয় বরং পরিবারের পছন্দেই বিয়ে করেছি। প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ঢাকতেই আমাকে বিয়ে জন্য নোটিশ দেয়া হয়। তবে, নোটিশ দেয়ার আগে থেকেই আমার বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজছিল পরিবার লোকজন। কিন্তু ওই সময় পাত্রী পাওয়া যায়নি। এখন আর স্যার আমাকে বিয়ের কথা বলতে পারবেন না। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক শোকজ অবস্থায় রয়েছেন। স্যারকেও বউ ভাতের দাওয়াত দিয়েছি।’
রনির বিয়ের অনুষ্ঠানে দু’পক্ষের পরিবারের লোকজন ছাড়াও স্কুলের শিক্ষক ও স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
রনির বড় ভাই রানা পাল বলেন, ‘দুই পক্ষের সম্মতিতে রনি ও স্বর্ণার বিয়ে ঠিক করা হয়। তারা দুজনই খুশি। হিন্দু রীতি অনুসরণ করে বিয়ে হয়েছে। তাই বিয়ে সম্পন্ন করতে দেরি হয়েছে। আমরা পরিবার থেকে রনিকে বিয়ে দেয়ার জন্য চেষ্টা করছিলাম, অবশেষে সফল হলাম।’
কনে স্বর্ণা পাল বলেন, ‘আমি রনি স্যারকে বিয়ে করে অনেক খুশি। পরিবারের লোকজনের কাছে শুনেছি স্যার অনেক ভালো মানুষ। তার সম্পর্কে যে যাই বলুক, আমি সুখী হবো আশা করছি।’
রনির সহকর্মী সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পঙ্কজ বলেন, ‘রনি স্যারের বিয়ে হওয়াতে আমরা অনেক খুশি। কেউ আর স্যারকে বিয়ের কথা বলতে পারবে না।’
২০১৬ সালে সহকারী শিক্ষক পদে ওই বিদ্যালয়ে যোগদান করেন রনি প্রতাপ পাল। সবার কাছে আর্শীবাদ চেয়েছেন নবদম্পতি।