রাত পোহালেই মহান বিজয় দিবস। বিজয় দিবস ঘিরে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতেছে জাতি। ১৯৭১ সালের এদিনে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাস্ত করে বিশ্ব মানচিত্রে স্থান করে নেয় নতুন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
বিজয়ের দিনটি স্মরণীয় করে তুলতে রাজধানী ঢাকাকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। আলোকসজ্জায় রঙিন রাতের ঢাকা যেন একখণ্ড লাল-সবুজের পতাকা।
বাহারি আলোকসজ্জার সঙ্গে আছে লাল, নীল, হলুদ, সাদা, সোনালি রঙের বাতি। আলোকসজ্জার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ভাস্কর্যের প্রতীকী। জাতীয় পতাকার আদলে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন ভবন।
রাজধানীর ব্যাংকপাড়া খ্যাত মতিঝিল, পল্টন, দৈনিক বাংলা, গুলিস্তান, সচিবালয়, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ভবন, মতিঝিল শাপলা চত্বর এলাকার সোনালী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, জীবন বীমা ভবনসহ বড় বড় স্থাপনা সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে।
কারওয়ান বাজারের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানও সাজানো হয়েছে। প্রতিটি ভবনকে লাল-সবুজের আদলে সাজানো হয়।
রাজধানীর পুরান ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস ও স্থাপনায় করা হয়েছে লাল-সবুজ আলোকসজ্জা।
দেশের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাস লাল-সবুজ আলোয় ঝলমল করছে। রঙিন আলোয় প্রতিফলিত হচ্ছে বিজয়ের প্রতিচ্ছবি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক, ফটকের দুপাশের দেয়াল থেকে শুরু করে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত, নতুন একাডেমিক ভবন, একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ভাষ্কর্য, ভাষা শহীদ রফিক ভবন, অবকাশ ভবন সেজেছে সবুজ আলোয়। মাঝের প্রশাসনিক ভবন লাল আলোয় সাজানোয় ফুটে উঠেছে লাল-সবুজের পতাকার প্রতিচ্ছবি।
শহীদ মিনারও সেজেছে লাল-সবুজে। শহীদ মিনারের সামনে লাল-সবুজের আলোয় ফুটিয়ে তলা হয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।
শুক্রবার সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পাসে জ্বলে ওঠে লাল-সবুজ আলো। আলোকসজ্জায় রঙিন ক্যাম্পাস যেন পরিণত হয়েছে একখণ্ড লাল-সবুজের পতাকায়।
সন্ধ্যা থেকেই ক্যাম্পাস ঘুরে ঘুরে বর্ণিল আলোকসজ্জা দেখে বেড়াচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মনকাড়া এমন আলোকসজ্জায় মুগ্ধ সবাই। ঘুরে দেখার পাশাপাশি আবার অনেকে সুন্দর এ দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করছেন। বিজয়ের উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছেন সবাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্যাম্পাস সাজানো হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার আলোকে লাল-সবুজের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।’
বিজয়ের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনে লাল-সবুজের আলো মেখে বিজয়কে বরণ করে নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। আমরা বিজয় দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।’
পুরান ঢাকার আরেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবি নজরুল সরকারি কলেজের ক্যাম্পাসজুড়েও বাহারি রঙের ছড়াছড়ি। পুরো ক্যাম্পাস মেতেছে যেন বিজয়ের উল্লাসে।
পার্শ্ববর্তী সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ ক্যাম্পাসও পরিণত হয়েছে একখণ্ড লাল-সবুজের পতাকায়। আলোরও আছে নিজের ভাষা। সে ভাষায় লাল-সবুজ মানেই প্রিয় বাংলাদেশ। তাই আলোয় এই দুই রঙের প্রভাবই একটু বেশি। তবে আনন্দের এই রঙিন শহরে ঠাঁই হয়েছে নীল-হলুদসহ বাহারি আলোর।
পুরান ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস এবং স্থাপনায়ও করা হয়েছে লাল-সবুজ আলোকসজ্জা।