আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শরিকদের কাউকে নির্বাচনে বিজয়ের গ্যারান্টি দেবে না আওয়ামী লীগ। তাদেরকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই জয়ী হতে হবে।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা কাউকে বিজয়ের গ্যারান্টি দিতে পারব না। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আমারও বিজয়ের গ্যারান্টি নেই। আমাকেও চারজনের সঙ্গে লড়াই করতে হবে। যদি তাদের মধ্যে কেউ জিতে যান আমাকে মেনে নিতে হবে। এখানে হার-জিতের প্রশ্ন হবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শরিক দলের নেতাদের সন্তুষ্ট-অসন্তুষ্ট হওয়ার কিছু নেই। যার যার প্রতীকেই নির্বাচন করতে পারবেন সবাই। তাদের কেউ বাধা দেয়নি, দেবেও না। তাদের সবার এবার নির্বাচন করার সুযোগ আছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টি তাদের নিজস্ব দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবে। ১৪ দলে কয়েকটি নৌকা দেবো। ৭টি নির্বাচনি এলাকায় আমরা নৌকার ছাড় দিতে পারব। ইতোমধ্যে আমি ১৪ দলের সমন্বয়ককে আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। তারা সবাই তাদের দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করুক- এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের বৈঠকের বিষয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। সবাই শুধু বিভিন্ন দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে কথা বলেন। এই সময়টাকে, আমাদের এই অ্যালায়েন্সটাকে আমরা যতটা রাজনৈতিক মূল্য দিচ্ছি, আসনের ব্যাপারটা কম।’
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি বিএনপির শাখা হয়ে গেছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘টিআইবি আর বিএনপি একই সুরে কথা বলছে। এবার ২৮টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচন থেকে দূরে রয়েছে। টিআইবি বলছে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। টিআইবির কাছে জানতে চাই, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে কী বুঝায়?’
আওয়ামী লীগের এই দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা বলেন, ‘নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রাণ। সরকারি দল হিসেবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক করাই আওয়ামী লীগের দায়িত্ব। যে কোনো মূল্যে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করে রেকর্ড করতে চায় আওয়ামী লীগ।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে নির্বাচন কমিশনের নেয়া ব্যবস্থাকে স্বাগত জানাচ্ছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ সমর্থন করেছে। নির্বাচন কমিশনকে কোনোভাবে প্রভাবিত করছে না আওয়ামী লীগ।
‘এবার যে কোনো মূল্যে আমরা সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে একটা রেকর্ড রাখতে চাই। নির্বাচনে জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। নির্বাচন কেমন হয় তা দেখে লজ্জা পাবে বিএনপি। বিএনপির হ্যাঁ-না ভোটের পুনরাবৃত্তি এই নির্বাচনে হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন এবার একটা ভালো দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এমন একটি নির্বাচন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অঙ্গীকার। তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন- দেশ-বিদেশে একটি ভালো দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এমন একটি নির্বাচন করবেন। যাতে জনগণ খুশি থাকে। অতীতে বিএনপি নির্বাচনের নামে জনগণকে প্রতারিত করেছে। এখন তা হবে না।’
বিজয় দিবসের কর্মসূচির বিষয়ে কাদের বলেন, ‘সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে আমাদের কর্মসূচি শুরু হবে। ১৭ ডিসেম্বর আলোচনা সভা হবে। ১৮ ডিসেম্বর বিজয় শোভাযাত্রা করা হবে। সেদিন একযোগে সারা দেশে বিজয় শোভাযাত্রা করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম ও সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।