বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ, থাকছে চার স্তরের নিরাপত্তা

  • প্রতিনিধি, সাভার   
  • ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০৮:৪০

ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইতোমধ্যেই আমাদের প্রস্তুতিমূলক ডেপ্লয় করা হয়েছে। স্মৃতিসৌধের আশপাশের এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য বাসিন্দাদের সাথে কথা বলছি, যাতে বহিরাগত কেউ আসলে পুলিশকে জানায়। এ ছাড়া ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে সার্বিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন।’

মহান বিজয় দিবস সমগ্র বাঙালি জাতির এক গৌরবময় দিন। প্রতি বছর এই মাহেন্দ্রক্ষণ এলেই কোটি বাঙালি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, দেশি-বিদেশি কূটনীতিক আর সর্বসাধারণের আগমন ঘিরে প্রায় এক মাস আগে থেকেই প্রস্তুত হতে থাকে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ।

প্রতি বছরের মতো এবারও তাই ধুয়ে-মুছে ও বাহারি ফুল দিয়ে সাজিয়ে প্রস্তুত করে তোলা হচ্ছে সৌধ প্রাঙ্গণ। ৫২তম মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি হিসেবে এখন চলছে তিন বাহিনীর কুচকাওয়াজ ও মোটরসাইকেল মহড়া।

ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও সৌধ ও আশপাশের এলাকায় চার স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে দেখা যায়, সৌধ এলাকায় চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ধোয়া-মোছা ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। গাছপালা কেটেছেঁটে পরিপাটি করা হয়েছে সৌধ এলাকার ১০৮ একর জায়গা। পরিষ্কার করা হয়েছে পুরো এলাকা।

লাল-ইটের হেরিংবন্ডে এরই মধ্যে লেগেছে সাদা রঙের ছোঁয়া। বিভিন্ন স্থানে লাল টকটকে ফুলের টবে শোভা পাচ্ছে বাহারি ফুল গাছ। সৌধ বেদির সামনের অংশে গাছ দিয়ে বানানো হয়েছে জাতীয় পতাকা। লেকের পানিতে নতুন করে রোপন করা হয়েছে লাল শাপলা। আলোকসজ্জার কাজও পুরোপুরি শেষ।

কয়েক ঘণ্টা পরই ১৬ ডিসেম্বর সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপন শুরুর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েছে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের দায়িত্বরত গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, মহান বিজয় দিবসে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরাসহ লাখো মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধকে প্রায় এক মাস ধরে ধুয়ে-মুছে, রঙতুলির আঁচড় ও রঙবেরঙের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে।

সেই সঙ্গে স্মৃতিসৌধে আগত দর্শনার্থীসহ সবার নিরাপত্তা ও কোনো প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এখানকার পুলিশ ও আনসার ক্যাম্পকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক অবস্থানে রাখা হয়েছে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধে কর্মরত আব্দুল মতিন বলেন, ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে স্মৃতিসৌধকে সুন্দর করে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি। কেউ ধোয়া-মোছা, কেউ গাছপালা ছাঁটা, লেক সংস্কার, রঙ করা, আলোকবাতি ও সিসিটিভি লাগানোসহ নানা কাজ করছে। এখন কাজ শেষ পর্যায়ে। আমরা সৌধের বিভিন্ন স্থানে হরেক রকম ফুল ও পাতা বাহার গাছের টব বসিয়েছি। অনেক জায়গায় বিভিন্ন রকম ফুল লাগানো হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিজয় দিবসের দিন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। তাই আমরাও স্মৃতিসৌধকে সুন্দর করে তুলতে অক্লান্ত ভাবে কাজ করছি। ২০০৪ সাল থেকে আমি এই কাজ করি। বিজয় ও স্বাধীনতা দিবস ঘিরে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করতে পেরে আমার অনেক ভালো লাগে।’

মো. সুমন নামে আরেক কর্মী বলেন, ‘আমরা স্মৃতিসৌধের বেদি পর্যন্ত পায়ে হাটার সবগুলো পথে লাল ইটে সাদা রঙ দিচ্ছি যাতে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। প্রতিদিনেই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আমরা এই কাজ করছি। এ ছাড়া ল্যাম্প পোস্টসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও কাঠের তৈরি জিনিসপত্রে রঙ করে সুন্দর করা হচ্ছে যাতে সবার ভালো লাগে। এই কাজ করতে পেরে আমাদের অনেক ভালো লাগে এবং গর্ববোধ করি।’

সাভার গণপূর্ত বিভাগ ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও আমন্ত্রিত অতিথিসহ লাখ লাখ জনতা বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

‘সেই লক্ষ্যে পুরো স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্সকে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার পরিপাটি করা, ফুল দিয়ে সাজানো, রঙ-তুলির কাজ, সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও লেক সংস্কারসহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। বর্তমানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা ও সৌন্দর্যবর্ধন কাজের জন্য গত চার ডিসেম্বর থেকে স্মৃতিসৌধ এলাকায় জনসাধারণ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পরেই সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে সৌধ এলাকা।’

ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও দেশী-বিদেশী কূটনীতিকসহ সর্বসাধারণের আগমন উপলক্ষে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে চার স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি আমরা গোয়েন্দা নজরদারিও রাখছি।’

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই আমাদের প্রস্তুতিমূলক ডেপ্লয় করা হয়েছে। স্মৃতিসৌধের আশপাশের এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য বাসিন্দাদের সাথে কথা বলছি, যাতে বহিরাগত কেউ আসলে পুলিশকে জানায়। এ ছাড়া ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে সার্বিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন।’

এ বিভাগের আরো খবর