বিএনপিসহ বিরোধীদের কথা সরাসরি উল্লেখ না করে মানুষ হত্যাকারী, রেললাইনে আগুন দেয়া লোকজনকে রুখে দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবনে বুধবার ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষকে হত্যা করে সরকার উৎখাত করবে? মানুষ হত্যা করে আন্দোলন? আমি জানি না এই আন্দোলন করে কী পাবে তারা?
‘যারা রেললাইন কেটে দিয়ে বগি ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যার পরিকল্পনা করে আর আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায় আর পিটিয়ে পিটিয়ে পুলিশ সাংবাদিক থেকে শুরু সাধারণ মানুষকে মারে, মিছিলে মেয়েদের ওপর অত্যাচার করে, এদের ক্ষমা নাই। এদের শাস্তি একদিন পেতেই হবে। জনগণকে বলব এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘মানুষকে পুড়িয়ে মারার মধ্য দিয়ে কী আন্দোলন হয়, সেটা আমার জানা নাই। আমরাও আন্দোলন করেছি জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আর মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়, সেটা চিন্তা করে, কিন্তু আমি এ রকম আন্দোলন দেখি নাই।
‘বিপরীতে এটা দেখেছি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে, তারা আমাদের এভাবে সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে। আর এখন দেখি ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের হামলা, হাসপাতাল রেহাই পায় না। হাসপাতালের ওপর পর্যন্ত তারা বোম্বিং করে। ঠিক আমাদের দেশে যেন সেই চিত্রটাই দেখতে পাই।’
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের নামে অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলা, পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দেয়া, পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশকে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা—এ রকম বীভৎস ঘটনা বাংলাদেশে ঘটানো হচ্ছে। এটা নাকি আন্দোলন। তাহলে কার স্বার্থে আন্দোলন?’
গাজীপুরে রেললাইন কাটা ও ট্রেনের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটু চিন্তা করে দেখুন, কী রকম ধ্বংসাত্মক কাজ! রেললাইন ফেলে দিয়েছে। তার মানে হচ্ছে রেলের বগি ফেলে দিয়ে মানুষকে হত্যা করা। এদের মধ্যে মনুষ্যত্ব বোধ বলে কিচ্ছু নেই। দেশের মানুষের প্রতি আমার আহ্বান, এদের প্রতিহত করতে হবে।’
বিএনপির বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিএনপি যে এই জ্বালাও-পোড়াও করে যাচ্ছে, প্রতিদিন তারা অবরোধ আর হরতাল ডেকে যাচ্ছে। হরতাল অবরোধ মানে কি কয়েকখান বাস পোড়ানো, গাড়ি পোড়ানো, যাত্রীসহ বাস পোড়ানো?
‘চাল যাচ্ছে; চালের গাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে। ধান যাচ্ছে; ধানের গাড়ি পোড়াচ্ছে। মানে মানুষকে ক্ষুধার্ত মারা। এই ঘটনা এর আগেও তারা করেছে ২০১৩ সালে। আমি জানি না তাদের কোনো মতে কেউ থামাতে পারবেন কি না। এই মানুষ হত্যা করে সরকার উৎখাত তো করতে পারবে না।’
ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার চেষ্টা আওয়ামী লীগের নেই মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের কাছে যাবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে, সে ক্ষমতায় আসবে।’
দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন উন্নয়নকাজের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা যতক্ষণ ক্ষমতায় আছি, দেশের উন্নতি করছি এবং দেশ যে উন্নতি হয়েছে, এটা তো কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আজকে বাংলাদেশটা বদলে গেছে।’
ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের তো হাওয়া ভবন নেই। কারও পাওনা দিয়ে ব্যবসা নিতে হয় না।
‘ব্যবসায়ীরা স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে পারেন। অন্তত এইটুকু সুযোগ আমরা করে দিয়েছি।’