বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রতিমন্ত্রী ফরহাদের সম্পদ বেড়েছে কয়েক গুণ

  • প্রতিনিধি, মেহেরপুর   
  • ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৩:৩৭

হলফনামার তথ্য বলছে, বাৎসরিক কৃষি থেকে তার আয় হয় ২৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে ১৭ লাখ ৭৯ হাজার ৩৪৭ টাকা, শেয়ার বাজার ও ব্যাংক আমানত থেকে ৪ লাখ ২৮ হাজার ২০১ টাকা। এ ছাড়া পারিশ্রমিক, ভাতা, সম্মানী হিসেবে ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ২৭৫ টাকা আয় করেন। নগদ রয়েছে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৬ টাকা।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় মেহেরপুর-১ (সদর ও মুজিবনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দোদুলের ছিল নগদ ৬ লাখ টাকা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে তার কাছে আছে নগদ ১ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৬ টাকা।

আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনকে দেয়া হলফনামায় এই তথ্য দিয়েছেন এবারও আসনটি থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া এ প্রার্থী। পাঁচ বছরে তার সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে কয়েক গুণ। বেড়েছে স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণও।

মনোনয়নপত্রের সঙ্গে রিটানিং কর্মকর্তার কাছে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ যে তথ্য জমা দিয়েছেন, এতে তিনি জানিয়েছেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার আগে তিনি ঢাকার একটি প্রাইভেট কলেজে শিক্ষকতা করতেন। পরপর দুই বার জাতীয় নির্বাচনে জিতে সর্বশেষ সংসদে তিনি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

গত ৫ বছরে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সম্পদ বেড়েছে কয়েক গুণ। হলফনামার তথ্য বলছে, বাৎসরিক কৃষি থেকে তার আয় হয় ২৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে ১৭ লাখ ৭৯ হাজার ৩৪৭ টাকা, শেয়ার বাজার ও ব্যাংক আমানত থেকে ৪ লাখ ২৮ হাজার ২০১ টাকা। এ ছাড়া পারিশ্রমিক, ভাতা, সম্মানী হিসেবে ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ২৭৫ টাকা আয় করেন। নগদ রয়েছে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৬ টাকা।

পাঁচ বছর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় তার ছিল নগদ ৬ লাখ টাকা। কৃষি খাত থেকে আয় ছিল ৪ লাখ টাকা। শেয়ার/সঙ্কয়পত্র ছিল ১৫ হাজার ৩৫৩ টাকার। জমির পরিমাণ ছিল ৫১ শতক।

বর্তমানে প্রতিমন্ত্রীর ব্যাংকে আছে ২৯ লাখ ১ হাজার ৯১৫ টাকা এবং পোস্টাল সেভিংস রয়েছে ৪০ লাখ টাকার, যার অর্ধেক তার স্ত্রীর নামে। তিনি যে গাড়িটি ব্যবহার করছেন তার দাম ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর নামে একটি মাইক্রোবাস রয়েছে, যার দাম ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী মোনালিসার নগদ টাকা রয়েছে ৪৭ লাখ, ব্যাংকে জমা আছে দেড় লাখ, সয়ঞ্চয়পত্র কেনা আছে ২০ লাখ টাকার, ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে ৪০ লাখ টাকা। ফরহাদ হোসেনের নিজের ২৫ ভরি ও স্ত্রীর ১৩০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। যার প্রতিভরি স্বর্ণের মূল্য দেখানো হয়েছে ১২ হাজার ৮০০ টাকা।

প্রতিমন্ত্রীর কৃষিজমি রয়েছে ২৭৪ শতক। রাজধানীর উত্তরায় ১ হাজার ৬০০ স্কয়ার ফুটের একটি ফ্ল্যাট তার নামে রয়েছে, তবে তা বুঝে পাননি। এ ছাড়া একটি দোতলা পাকা বাড়ি রয়েছে তার।

এদিকে মেহেরপুর-২গাংনী আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেয়া হলফনামা অনুযায়ী, তার অস্থাবর সম্পদের মূল্য ৫১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দেয়া হলফনামায় যা ছিল প্রায় তিনগুণ কম। একই সঙ্গ তার বার্ষিক আয় বেড়েছে চারগুণ।

২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তার বার্ষিক আয় ছিল ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকাতে।

বতর্মানে মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের বার্ষিক আয় ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষি জমি থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং মৎস্য খাত থেকে ৫ লাখ টাকা।

২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তার বার্ষিক আয় ছিল ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। আয়ের খাত ছিল কৃষি জমি থেকে ৭০ হাজার টাকা এবং ব্যবসা থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের বর্তমান অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৫২ লাখ টাকার এবং ২৫ ভরি স্বর্ণ। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা ২ লাখ, ব্যাংকে জমা ৪২ লাখ, একটি গাড়ি যার মূল্য ৫ লাখ টাকা, গৃহস্থলির ইলেকট্রনিক্স ও আসবাবপত্র ২ লাখ টাকার।

২০১৮ সালের নির্বাচনিহলফনামায় অস্থাবর সম্পদ ১৭ লাখ ৭০ হাজার টাকার মধ্যে নগদ ছিল ২ লাখ, ব্যাংকে জমা ১৪ লাখ, গৃহস্থলির ইলেকট্রনিক্স ও আসবাবপত্র ১ লাখ ২০ হাজর টাকার এবং ১৫ ভরি স্বর্ণ ৫০ হাজার টাকার।

সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের স্থায়ী সম্পদের মধ্যে কৃষি জমির পরিমাণ শতাংশ না একর, কোন পরিমাপের প্রকাশ করা হয়েছে সেটা স্পষ্ট করা হয়নি।

২০১৮ সালের নির্বাচনের হলফনামায় উল্লেখ ছিল তার কৃষি জমি ১০ বিঘা এবং অকৃষি জমি ৫ বিঘা ৫ কাঠা। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনার স্থাবর সম্পদের ছককৃত ঘরে লেখা আছে ৯.৩৩। তবে স্পষ্ট করা হয়নি। যদি এটা একরে হয়ে থাকলে তাহলে জমির পরিমাণও বাড়বে কয়েকগুণ।

আবার সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের স্ত্রীর সম্পদও বেড়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেতাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের মূল্য ৩৭ লাখ টাকা এবং স্বর্ণ ২৫ ভরি উল্লেখ করা হয়েছে, তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তার অস্থাবর সম্পদ ছিল ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার। সে হিসেবে এমপি পত্নীর সম্পদ বেড়েছে প্রায় চার গুণ।

তার স্ত্রীর নামে জমির পরিমাণও বেড়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে জমির পরিমাণ ছিল ৭ কাঠা। এখন তার পরিমাণ কৃষি জমি ২.২৯। তবে এক্ষেত্রে জমির পরিমাণ শতাংশ না একরে তা হিসাব উল্লেখ করা হয়নি।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

একজন আওয়ামী লীগ সমর্থক সৌরপ হোসেন বলেন, আমাদের জেলার এমপি মন্ত্রীদের সম্পদ বেড়েই চলেছে। দের করোনা বলেন আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ কোনকিছুতেই এদের সম্পদ কমে না।

স্কুল শিক্ষক রোকনুজ্জামান বলেন, একজন প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা দেন তার সব তথ্য ও স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির সত্য দেয়া ঠিক।

তৃণমূলে রাজনীতি করা সম্রাট আলী বলেন, হলফনামায় দেখছি একজন এমপি প্রতিভরি স্বর্ণের দাম ধরেছেন ১২ হাজার ৮০০ টাকা। অথচ বতর্মান বাজারে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৯ হাজার টাকা করে।

মেহেরপুর সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল আমিন হোসেন বলেন, এমপিরা সম্মানীয় ও শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। তাদের সম্পদের বিবরণী সঠিকভাবে হলফনামায় উপস্থাপন করা উচিত।

এ বিভাগের আরো খবর