বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মনোনয়নবঞ্চিত আওয়ামী লীগের এমপিরা কমিয়েছেন জনসম্পৃক্ততা

  •    
  • ৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১১:২৯

দলীয় মনোনয়বঞ্চিত ৯ জনের মধ্যে ৭ জন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেননি। বাকি দুই জন মনোনয়নপত্র জমা দিলেও একজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিতে চেয়েছেন।

মাত্র কয়েকদিন আগেও তাদের ক্ষমতার দাপট ছিল প্রবল। সংসদীয় আসনের সব সিদ্ধান্ত নিতেন তারাই, এলাকায় চলতেন পুলিশ প্রহরায়। দলের নেতা-কর্মীরা ভিড় জমাতেন তাদের কার্যালয়ে। খুলনা বিভাগের এমন ৯ জন সংসদ সদস্য এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাননি।

এদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সরকারের মন্ত্রী পরিষদের সদস্য শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান ও জাতীয় সংসদের সরকার দলীয় হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাসও। নিজ দল থেকে বঞ্চিত হওয়ার পর এসব এমপি কমিয়ে দিয়েছেন জনসম্পৃক্ততা।

দলীয় মনোনয়বঞ্চিত ৯ জনের মধ্যে ৭ জন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেননি। বাকি দুজন মনোনয়নপত্র জমা দিলেও একজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিতে চেয়েছেন। আওয়ামী লীগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিভাগের খুলনা জেলায় এবার তিনজন দলীয় এমপিকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি।

খুলনা-১ আসনে পঞ্চানন বিশ্বাসের বদলে মনোনয়ন পেয়েছে ননী গোপাল মন্ডল। পঞ্চানন বিশ্বাস ১৯৯৬ সালে উপ-নির্বাচনে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০০১, ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও তিনি জয়ী লাভ করেন। তিনি বর্তমানে জাতীয় সংসদের হুইপ হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন। দলে থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় তাকে আর মাঠের রাজনিতীতে দেখা যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘অসুস্থ বলে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। যদিও আমি বাস্তবে অসুস্থ না। এখন দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই মেনে নিয়েছি।’

খুলনা-৩ আসনে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানের বদলে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনকে।

মুন্নুজান সুফিয়ান ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে খুলনা-৩ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। একই সঙ্গে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে দুই মেয়াদে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। দাপুটে এ নেতা এবার মনোনয়ন না পাওয়ার পর লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে গেছেন।

বাদ পড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দল যা ভালো মনে করে, আমার জন্য তাই ভালো।’

খুলনা-৬ আসনে মো. আক্তারুজ্জামানের বদলে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে মো. রশীদুজ্জামানকে। মো. আক্তারুজ্জামান ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আগে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে যুবলীগসহ মূলদল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। মনোনয়ন না পাওয়ার পর থেকে তাকে আর নিজ সংসদীয় এলাকায় দেখা যায়নি।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে একবার সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। এটা আমার ভাগ্যের ব্যাপার। আমি দলের জন্য কাজ করবো।’

অন্যদিকে যশোর-২ আসনে নাসির উদ্দিনের বদলে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তৌহিদ উজ জামানকে। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে তিনিও নেতা-কর্মীদের লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে গেছেন।

তিনি ক্ষোভ নিয়ে বলেন, ‘আমার আসনে এক অরাজনৈতিক নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তবে দলের সিদ্ধান্ত মেনে আমি নির্বাচনে অংশ নেব না।’

মাগুরা-১ আসনে মো. সাইফুজ্জামান শিখরের বদলে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে। এ প্রসঙ্গে শিখর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান হয়ে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়া সুযোগ নেই। এখন দলের জন্যই কাজ করতে হবে।’

বাগেরহাট-৪ আসনে আমিরুল ইসলাম মিলনের বদলে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

আমিরুল ইসলাম মিলন ২০১৬ ও ২০১৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মনোনীত হন। ২০২০ সালের উপ-নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পেয়ে তিনিও নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা কমিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্তের বাইরে আমি কোনো সিদ্ধান্ত নেই। যাকে মনোনয়ন দিয়েছে, তার পক্ষেই কাজ করব।’

আমিরুল ইসলাম মিলন (ওপরে বাঁয়ে), মো. নাসির উদ্দীন (ডানে), মো. আক্তারুজ্জামান বাবু (নিচে বাঁয়ে) ও জগলুল হায়দার। ফাইল ছবি

এ ছাড়াও সাতক্ষীরা-৪ আসনে জগলুল হায়দারের পরিবর্তে এস এম আতাউল হককে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

জগলুল হায়দার ২০১৮ ও ২০১৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ব্যাপকভাবে এলাকার মানুষের সাথে মেলামেশা করতেন। তবে এবার মনোনয়ন না পেয়ে অনেকটা নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন।

তিনি বলেন, ‘নেত্রী আমার ওপর আগের দুই বার আস্থা রেখেছেন। এবার আমি নেত্রীর ওপর আস্থা রাখলাম। দলের জন্য কাজ করতে শিগগিরই মাঠে নামবো।’

দুই এমপির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

যশোর-৪ আসনে সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়ের বদলে এনামুল হক বাবুলকে ও সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির জায়গায় আসাদুজ্জামান বাবুকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে দলীয় মনোনয় না পেলেও রণজিত কুমার রায় ও মীর মোস্তাক আহমেদ রবি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন।

যশোর-৪ আসনে ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন রণজিত কুমার রায়। তিনি বলেন, ‘মনোনয়নপত্র উইথড্র করার সুযোগ রয়েছে। আমি নৌকার বিপক্ষে ভোট করব না।’

অন্যদিকে সাতক্ষীরা-২ আসনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নৌকমান্ড মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। তিনি মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চান বলে জানিয়েছেন। এছাড়া মাঠ না ছাড়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর