দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখের বেশি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি মঙ্গলবার প্রকাশিত জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২-এ প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী দেশের গণনাকৃত মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ ও সমন্বয়কৃত মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১।
‘সমন্বয়কৃত মোট জনসংখ্যার ৬৮.৩৪ শতাংশ পল্লিতে এবং ৩১.৬৬ শতাংশ শহরাঞ্চলে বসবাস করে।’
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘দেশের মোট গণনাকৃত জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬-এর মধ্যে পুরুষ ৮ কোটি ১৭ লাখ ৬৯ হাজার ২৬৬, নারী ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৮১ হাজার ২৬৬ ও হিজড়া ৮ হাজার ১২৪।
‘বস্তিতে বসবাসকারী মোট জনসংখ্যা ১৭ লাখ ৩৬ হাজার ৩০২ এবং মোট ভাসমান জনসংখ্যা ২২ হাজার ১৮৫।’বিভাগভিত্তিক জনসংখ্যার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বিভাগভিত্তিক উপাত্ত বিবেচনায় দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে দেশের সর্বাধিক জনসংখ্যা ৪ কোটি ৪২ লাখ ১৫ হাজার ৭৫৯ বসবাস করে। পক্ষান্তরে বরিশালে সবচেয়ে কম ৯১ লাখ ১০৪ জন বসবাস করে।’
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দেশে গড় বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস পেয়ে ১.২২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ২০১১ সালে ছিল ১.৪৮ শতাংশ। পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে এ হার যথাক্রমে ১.১২ ও ১.৩১ শতাংশ।’
সিটি করপোরেশনের জনসংখ্যার বিষয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘সিটি করপোরেশনগুলোতে বসবাসরত মোট জনসংখ্যা ২ কোটি ১১ লাখ ২২ হাজার ৯৩০, যার মধ্যে পুরুষ ১ কোটি ১২ লাখ ১৮ হাজার ৫৪৬ (৫৩.১১%), নারী ৯৯ লাখ ২ হাজার ৯৯৫ (৪৬.৮৮%) ও হিজড়া ১ হাজার ৩৮৯ (০.০০৭%)।
‘জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সবচেয়ে বেশি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, যেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৩৯ হাজার ৪০৬ জন লোক বাস করে।’
জনসংখ্যার কোন অংশ কত শতাংশ, তা নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী জনসংখ্যার হার সবচেয়ে বেশি ১০.০৩%। অন্যদিকে ক্রমপুঞ্জিত শতকরা হার পর্যালোচনায় দেখা যায়, দেশের মোট জনগোষ্ঠীর মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সী জনসংখ্যা রয়েছে ২৮.৬০%, ৩০ বছরের কম বয়সী জনসংখ্যা রয়েছে ৫৬.৪২% এবং ৬০ বছরের কম বয়সী জনসংখ্যা রয়েছে ৯০.৭৩%।’
বিবাহিত জনগোষ্ঠীর বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দেশের ১০ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৬৫.০৮% বর্তমানে বিবাহিত, ২৮.৮২% অবিবাহিত। জাতীয় পর্যায়ে পুরুষ ও নারীদের বিবাহের গড় বয়স যথাক্রমে ২৫.২৮ এবং ১৯.২৯ বছর।’
প্রতিবেদনে ধর্মভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, বর্তমানে দেশে বসবাসরত মোট জনসংখ্যার ৯১.০৮% মুসলিম, ৭.৯৬% হিন্দু, ০.৬১% বৌদ্ধ, ০.৩০% খ্রিষ্টান ও ০.০৬% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।
বিবিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা ২২ লাখ ৬৫ হাজার ২০১, যা মোট জনগোষ্ঠীর ১.৩৭ শতাংশ।
স্বাক্ষরতার হার নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘জাতীয় পর্যায়ে ৭ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠীর সাক্ষরতার হার ৭৮.৪০ শতাংশ। পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে এ হার যথাক্রমে ৭৬.৭১% ও ৭২.৯৪%। একই বয়সী জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে দেশের পল্লি এলাকায় সাক্ষরতার হার ৭১.৬৮% ও শহর এলাকায় ৮১.৪৫%।
‘দেশে ৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী মোট পুরুষের মধ্যে ৫৭.৩০% ও নারীদের মধ্যে ৪৯.৯২% বর্তমানে শিক্ষার্থী। জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষার ক্ষেত্রে সাধারণ ক্যাটাগরির হার সর্বোচ্চ, যা ৮৯.২৬%। এরপর রয়েছে ধর্মীয় শিক্ষা ৭.১৯%, অন্যান্য ক্যাটাগরির শিক্ষা ২.৭৪% ও কারিগরি শিক্ষা ০.৮১%।’