আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি আদালতে আত্মসমর্পণের পর পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মনিরুল ইসলাম খান জানান, মঙ্গলবার দুপুরে সহিদুর রহমান খান মুক্তি টাঙ্গাইল প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে বিচারক মো. মোস্তফা শাহরিয়ার খান তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
সহিদুর রহমান খান মুক্তি এর আগে ২০ নভেম্বর উচ্চ আদালত থেকে ৬ মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়ে ২২ নভেম্বর কারামুক্ত হয়েছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২৬ নভেম্বর আপিল বিভাগের আদেশের তথ্য গোপনসহ সহিদুরের জামিন আবেদন ঘিরে কিছু অসংগতির অভিযোগ তোলে রাষ্ট্রপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সহিদুরকে টাঙ্গাইলের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়।
এর আগে আপিল বিভাগ ২৭ আগস্ট এক আদেশে সম্ভাব্য ছয় মাসের মধ্যে মামলাটির বিচার কাজ শেষ করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেয়। এতে তথ্য গোপনের বিষয়টি নজরে এনে শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আত্মসমর্পণের ওই আদেশ দেয়।
২২ নভেম্বর কারামুক্ত হওয়ার পর সহিদুর রহমান খান মুক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। মঙ্গলবার দুপুরে হুইল চেয়ারে বসে তিনি আদালতে আসেন। এ সময় তার বাবা টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান এবং ভাই সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা তার সঙ্গে ছিলেন।
২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর মুক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। মাঝে গত বছর অন্তর্বর্তী জামিনে ১৮ দিন কারাগারের বাইরে ছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন।
পরে গোয়েন্দা পুলিশ রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামের দুজনকে ২০১৪ সালে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেয়া জবানবন্দিতে এ হত্যায় তৎকালীন সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা এবং তার অন্য তিন ভাই পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকণ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে।
ছয় বছর আত্মগোপনে থেকে ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর সহিদুর রহমান খান মুক্তি টাঙ্গাইল আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।