দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির তিন নেতা। তবে জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, তারা দল মনোনীত নৌকার প্রার্থীকেই নির্বাচিত করতে মাঠে কাজ করবেন।
রোববার আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ঘোষণাকালে সুনামগঞ্জ-১ আসনে সাবেক ছাত্রনেতা ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রনজিৎ চন্দ্র সরকারকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেয়া হয়। মনোনয়ন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন বর্তমান সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। এ ছাড়া সোমবার বিকেলে সুনামগঞ্জ-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও জাতীয় শ্রমিক লীগ, সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি সেলিম আহমদ।
সুনামগঞ্জ-৪ আসনে এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক নির্বাচন কমিশনের সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক। এ আসনে দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়া সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার এম এনামুল কবীর ইমন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন কিনেছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিম আহমদ বলেন, ‘আমরা যারা মনোনয়ন চেয়েছিলাম, নেত্রী সবাইকে বলে দিয়েছেন উৎসবমূখর পরিবেশে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন করার জন্য। আমি নেত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে এবং আমার কর্মী-সমর্থকদের চাপে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি দীর্ঘদিন যাবৎ তৃণমূলে রাজনীতি করে এসেছি। তাই আশা করছি, জনগণ আমার সঙ্গে থাকবে, আমাকে নির্বাচিত করবে।’
দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়া সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকে ওপেন করে দিয়েছেন। আমি ১৫ বছর ধরে মানুষের জন্য কাজ করছি। যিনি মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি দলের নেতা-কর্মীদের জন্য নিরাপদ নন। মানুষ নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছে। তাই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মানুষের আশ্রয়স্থল হিসেবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করছি, জনগণ সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ভোটের মাধ্যমে জবাব দেবে।’
সুনামগঞ্জ-৪ থেকে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিষ্টার এম এনামুল কবীর ইমন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক নির্বাচনকে উৎসবমূখর ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে এবং তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের চাপে আমার নেতা-কর্মীরা আমার পক্ষে মনোনয়নপত্র তুলেছেন। আমি ঢাকা থেকে এসে সবার সঙ্গে আলোচনা করে নমিনেশন জমা দেব।’
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল হুদা মুকট নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন পেতে সবার মাঝেই একটি প্রতিযোগিতা ছিল; এখন সেটি আর নেই। দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছে আমরা তার পক্ষেই কাজ করব।’