বিএনপি দেশের মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, দলটি জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের ডাকা অবরোধে নিজেদের সমর্থকদের সমর্থন নেই, কর্মীদেরও নেই।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির এই অবরোধের ডাকের মধ্যে যেভাবে রাজধানী ও সারাদেশের শহরগুলোতে যানজট এবং যেভাবে সব কর্মকাণ্ড চলছে, তাতে তাদের অবরোধের ডাক হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। আর নির্বাচনী ডামাডোল শুরু হলে এগুলো কেউ মনেও রাখবে না।
‘বিএনপি এসব ডাক দিয়ে নিজেদের কেন হাস্যকর করছে আর জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াচ্ছে সেটি আমার বোধগম্য নয়।’
চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস, নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি আমীর হামজা, সহ-সম্পাদক ফারুক আহম্মদ ও সামিনা ইসলাম নীলা, আইন সম্পাদক আব্দুল মতিন প্রধান এবং সদস্যদের মধ্যে ঈশা খান, বিল্লাল হোসেন, চান মিয়া, মীর্জা আব্দুল খালেক, ডা. আতিকুর রহমান প্রমুখ সভায় যোগ দেন।
‘মনোনয়নে জনপ্রিয়তা ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করা হয়েছে’
আওয়ামী লীগের ৭১-৭২ জন এমপি এবার দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত- এ সংক্রান্ত প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি নির্বাচনেই কিছু প্রার্থী বাদ পড়েন। এবার আগে থেকেই বলা হয়েছিলো যারা জনপ্রিয়তার দৌড়ে পিছিয়ে গেছেন বা যারা যে কোনো কারণে বিতর্কিত হয়েছেন, তাদেরকে মনোনয়ন দেয়া হবে না। সে কারণেই এবার অনেক বেশি প্রার্থী বাদ পড়েছেন।
‘মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা এবং এর বাইরে দুই বছরের বেশি সময় ধরে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা নানাভাবে তদন্ত করান। সে রিপোর্টগুলো সংগ্রহ করে জনপ্রিয়তা ও দলের প্রয়োজনীয়তা দুটিই বিবেচনা করা হয়েছে।’
‘স্বতন্ত্র প্রার্থিতা নিরুৎসাহিত নয়’
স্বতন্ত্র প্রার্থিতা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০১৪ সালে যারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন তাদের সবাইকে পেনাল্টি দিতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এবার সেই কথাটি মনে করিয়ে দিয়ে কোনো ছোটখাট দল থেকেও এমনকি কেউ যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চান সেটিকে নিরুৎসাহিত না করার কথা বলেছেন। আমাদের দল থেকে নয়, অন্য দল থেকে নানাভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়। যেমন আমার নির্বাচনী এলাকায় পাঁচ-ছয়জন প্রার্থী হয়েছেন। এটাকে যেন নিরুৎসাহিত না করা হয়, এই কথাটাই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবার ৩০টির মতো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহনের ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপির বহু নেতা তৃণমূল বিএনপি থেকে কিংবা অন্যান্যভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের পদক্ষেপ নিয়েছেন। কোন কোন দল অংশগ্রহণ করলো সেটার চেয়েও জনগণের অংশগ্রহণ আছে কি না সেটিই মুখ্য। আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে।’
‘আওয়ামী লীগ ১৪ দলীয় জোটে নির্বাচন করছে’
আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ নির্বাচন করবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা ১৪ দলীয় জোটবদ্ধগত নির্বাচন করবো সেটি আগেই ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো। এবার ২৯৮ আসনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। পরে জোটের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নির্বাচনের আগে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিবৃতি বিক্রি করে। তাদের নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না। দেশে যেমন কিছু বিবৃতিজীবী আছে, আন্তর্জাতিকভাবেও কিছু বিবৃতিজীবী আছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য বিবৃতি দেয়, গাজায় হত্যাকাণ্ড হলে চুপ থাকে আর বাংলাদেশে কাউকে ঘুষি মারলে বিবৃতি দেয়। এসব বিবৃতির গ্রহণযোগ্যতা নেই।’