বন্দর নগরী চট্টগ্রামে এক মাসেও গ্যাস সংকটের সমাধান হয়নি। এ সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কর্তৃপক্ষ বলছে, টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেয়া ও রক্ষণাবেক্ষণের কারণে বাসাবাড়িতে সাময়িকভাবে গ্যাস সরববাহ বন্ধ আছে।
এর ফলে রান্নার জন্য স্থানীয়দের বিকল্প উপায়ে যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে কিংবা বাইরে থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত ২২ অক্টোবর থেকে গ্যাস সংকট দেখা দেয়। অধিকাংশ এলাকায় সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ থাকছে না। রান্না ঘরের চুলা থেকে সিএনজি ফিলিং স্টেশন সব জায়গাতেই গ্যাসের সংকট। কোনো কোনো এলাকায় ভোরেই গ্যাস চলে যাচ্ছে।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) কর্তৃপক্ষ বলছে, মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেয়ায় চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। এই সংকট আগামী আরও দীর্ঘ হতে পারে।
নগরীর আসকার দীঘির পাড়, খুলশী, জামাল খান, দেওয়ানজি পুকুর পাড়, দেওয়ান বাজার, হেম সেন লেন, শুলক বহর, ঘাট ফরহাদবেগ, বাকলিয়া, চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় এক মাস ধরে এ সমস্যা অব্যাহত আছে।
বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, শুধু চলতি বছরই এমন গ্যাস সংকট হচ্ছে, তা নয়। বরং গত এক দশকের বেশি সময় ধরে প্রতি বছর নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি, চার মাস তারা একই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
নগরবাসীর অভিযোগ, প্রতি দিন ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত চুলায় গ্যাস সরবরাহ থাকছে না। এতে রান্না করতে সমস্যা হচ্ছে।
জাতীয় গ্রিড থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ করে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)।
কেজিডিসিএল সূত্র জানায়, বন্দরনগরীর দৈনিক চাহিদার বিপরীতে প্রতিদিন প্রায় ৪০ মিলিয়ন মেট্রিক স্ট্যান্ডার্ড ঘনফুট (এমএমসিএফ) গ্যাস কম পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে এই সংকট।
সূত্র আরও জানায়, কক্সবাজারের মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল থেকে সরবরাহ ঘাটতির কারণে সাময়িকভাবে চট্টগ্রামের জন্য দৈনিক বরাদ্দ গ্যাস ৩২০ এমএমসিএফ থেকে ২৮০ এমএমসিএফে নামিয়ে আনা হয়েছে।
এ ছাড়া ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) এবং কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডে (কাফকো) এ দুই কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করতে হচ্ছে।
এসব কারণে গৃহস্থালি খাতে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে বলে কেজিডিসিএল কর্মকর্তারা জানান।
কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (বণ্টন) প্রকৌশলী গৌতম চন্দ্র কুন্ডু বলেন, ‘মহেশখালীর দুটি এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে। এর একটি রক্ষণাবেক্ষণের কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ আছে। এ কারণে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষ হলে সংকট অনেকাংশে কেটে যাবে।’