বিএনপিসহ সমমনাদের হরতাল ও অবরোধের মধ্যে গত ২৯ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ২৭৫টি যানবাহন, ২৪টি স্থাপনা ও ১১টি অন্যান্য ভাঙচুরসহ ৩১০টি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বাহিনীটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উল্লিখিত সময়ে ২৯০টি যানবাহন, ১৭টি স্থাপনা ও ৬৯টি অন্যান্যসহ মোট ৩৭৬টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া অ্যান্ড পিআর বিভাগ থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপিতে বলা হয়, গত ২ নভেম্বর ঝালকাঠি জেলায় আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর, ৫ নভেম্বর পিরোজপুর এবং ৬ ও ১৫ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগের দুটি কার্যালয়ে দুবৃর্ত্তরা অগ্নিসংযোগ করে।
গত ১৯ নভেম্বর গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের বরমী ইউনিয়নের ১৩২ নম্বর গিলাশ্বর মরহুম আবদুল জব্বার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের তৈরি স্কুল ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে বিদ্যালয়টির চারটি বেঞ্চ ও একটি টিনের জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত ২৯ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনায় কর্তব্যরত অবস্থায় একজন পুলিশ সদস্যসহ ছয়জন নিহত হন।
অবরোধ চলাকালে ৩১ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত রেলওয়েতে ২৪টি নাশকতার ঘটনা ঘটে বলে জানায় পুলিশ।
বাহিনীটির ভাষ্য, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, টাঙ্গাইল ও জামালপুরে তিনটি ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ঢাকা মহানগরে একটি, ময়মনসিংহে দুটি, গাজীপুরে একটি, নেত্রকোণায় একটি এবং নওগাঁয় একটিসহ ছয়টি ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এর বাইরে কিশোরগঞ্জে একটি, নোয়াখালীতে দুটি, সিলেটে একটি, পাবনায় একটি, দিনাজপুরে একটি ও গাজীপুরে তিনটিসহ ৯টি রেললাইনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এ ছাড়া সিলেট, ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জে রেললাইনসহ তিনটি রেললাইন কেটে ফেলার চেষ্টা এবং গাইবান্ধায় রেললাইনের ফিস প্লেট খোলার চেষ্টার ঘটনা ঘটে। পাবনায় ট্রেনে পেট্রল ও ডিজেলভর্তি বোতল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া, নারায়ণগঞ্জে রেললাইনের ওপর অতিরিক্ত ৩ ফুট লম্বা ৩ ইঞ্চি চওড়া পাত সংযোজন করে নাশকতার চেষ্টা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২৯ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে রমনায় দুজন, বংশালে দুজন, মুগদায় চারজন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে দুজন, মোহাম্মদপুরে একজন, পল্লবীতে আটজন, কাফরুলে একজন, গুলশানে পাঁচজন, ক্যান্টনমেন্টে একজন, খিলক্ষেতে দুজন ও উত্তরা পূর্ব থানায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৮ অক্টোবর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত কুমিল্লায় অবরোধ ও হরতালের সময় পিকেটিং ও অগ্নিসংযোগ করার সময় ছয়টি ঘটনায় হাতেনাতে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একজন ও পিকেটিং করার সময় ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের অনেকেই নিজেদের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পুলিশকে বিতর্কিত করার জন্য নাশকতাকারীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ‘PRESS’ লেখা জ্যাকেট পরে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। ভাঙচুর ও নাশকতামূলক হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশ পুলিশ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
অবরোধ-হরতালে পরিবহন বা স্থাপনা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগকারীদের উপযুক্ত প্রমাণসহ ধরিয়ে দিলে অথবা সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হবে জানিয়ে পুলিশ বলেছে, তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে।