কক্সবাজারে দৃষ্টিনন্দন রেলওয়ে স্টেশনসহ ১৬টি উন্নয়ন প্রকল্প শনিবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে টিকিট কেটে রেললাইন ও কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের পর্দা উন্মোচন করবেন। পরে সেখানে সুধী সমাবেশ শেষে ট্রেনে করে রামু জংশন পর্যন্ত যাবেন তিনি।
বিকেলে মাতারবাড়ীর টাউনশিপ মাঠে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে তার।
চলতি বছরে কক্সবাজারে এটি প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় সফর। প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে সেখানে নেয়া হয় ব্যাপক প্রস্তুতি। নবরূপে সাজানো হয় পর্যটনের শহরকে।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে চাঙা হয়েছে দলের তৃণমূল। এরই মধ্যে উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা গণসংযোগ করছেন।’
জনসভায় প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, ‘কক্সবাজারবাসীকে না চাইতে দুহাত ভরে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই এবার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর পালা। আমার নেতৃত্বে প্রায় ২০ হাজার মানুষ মাতারবাড়ীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে যোগ দেবে।’
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন ও রেললাইন ছাড়াও সমাপ্ত হওয়া ১৩টি প্রকল্প উদ্বোধন ও তিনটি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য ফলক তৈরি করা হয়েছে।
উদ্বোধনের তালিকায় থাকা প্রকল্পগুলো হলো বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাটে ৫৯৫ মিটার দীর্ঘ পিসি বক্স গার্ডার ব্রিজ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে কুতুবদিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ঠান্ডা চৌকিদারপাড়ায় ৬০ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ, ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চকরিয়া পৌরসভা বাস টার্মিনাল সম্প্রসারণ প্রকল্প, ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪-এ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ) ডিজাইন ও স্থাপনকরণ প্রকল্প, সোয়া তিন কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় কক্সবাজার সদর উপজেলায় জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবন, মহেশখালীতে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ইউনুসখালী নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবন, প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে উখিয়ায় রত্না পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবন, প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে মরিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবন, ৫১ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে দুই হাজার ৬০০ মেগাওয়াট আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র (প্রথম সংশোধিত),
৬৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কুতুবদিয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে কুতুবদিয়া দ্বীপকে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্তকরণ প্রকল্প, ২৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন (প্রথম পর্যায়) (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় ডিপোজিট ওয়ার্ক হিসেবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) কর্তৃক ২১২ একর ভূমি ভরাট, ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার স্লোপ প্রটেকশন বাঁধ নির্মাণ, অ্যাপ্রোচ রোডসহ দুটি ব্রিজ ও সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প এবং ২৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে রামুতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প।
ভিত্তি স্থাপনের জন্য থাকা প্রকল্পগুলো হলো স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে টেকনাফে মাল্টিপারপাস ডিজ্যাস্টার রিজিলেন্ট শেল্টার কাম আইসোলেশন সেন্টার নির্মাণ, রামুর জোয়ারিনালা ইউপি-মোহসিনা বাজার ভায়া নন্দাখালী সড়কে ১৮৪ মিটার দীর্ঘ আর্চ ও আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প, মহেশখালীর মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প ও কক্সবাজার সদর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কাব স্কাউটিং সম্প্রসারণ (চতুর্থ পর্যায়) প্রকল্প।