‘আমি উপ-পরিচালক স্যারের সঙ্গে থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি করেছি, স্বীকার করছি। কিন্তু এইসব অনিয়ম তো আমার নির্দেশে হয়নি, হয়েছে উপ-পরিচালক সবুর স্যারের নির্দেশে। আমি শুধু তার নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছি।
‘প্রকল্প থেকে সরানো ৯ লাখ ৭৪ হাজার ৯৬০ টাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকা তো আমি নিজের চেক দিয়ে উত্তোলন করে স্যারকেই দিয়েছি। এখন তিনি বাকি টাকাটাও চান। প্রকল্পের সব কাজ যখন আমার মাধ্যমে হয়েছে, তখন ওই টাকাটা তো আমি খরচ করতেই পারি।
‘টাকাটা না দেয়ায় ক্ষেপে গিয়ে স্যার আমার নামে অভিযোগ দিয়েছেন; আমার বেতন আটকে দিয়েছেন। এতে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি যদি অন্যায় করে থাকি, তাহলে আমার চেয়েও বড় অন্যায় করেছেন সবুর স্যার।’
দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত হওয়ার পর বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) গাইবান্ধার উপ-পরিচালক আব্দুস সবুরের নামে নিউজবাংলার কাছে এভাবেই ফিরিস্তি দেন ‘গাইবান্ধা সমন্বিত দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্প’-এর হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আনিছুর রহমান।
শুধু ওই প্রকল্পের ৯ লাখ ৭৪ হাজার ৯৬০ টাকা নয়, এমন আরও অনেক প্রকল্প থেকে উপ-পরিচালক আব্দুস সবুর অন্তত ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে দাবি বরখাস্ত হওয়া ওই হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার। তার দাবি, আব্দুস সবুরের হাত থেকে রেহাই পায়নি রাজস্ব খাতও।
গাইবান্ধা সমন্বিত দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত শুরু হওয়ার পর এভাবেই থলে থেকে একে একে বেরিয়ে আসছে অপরাধ আর অভিযোগের বেড়াল।
প্রকল্প পরিচালকের করা অভিযোগে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আনিছুর রহমান। তার বিরুদ্ধে দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ৭ নভেম্বর তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে ঢাকার সদর দপ্তর থেকে পাঠানো তদন্ত দল।
আনিছুর রহমানের অভিযোগ, কৌশলে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। প্রকল্প থেকে সরানো টাকা যৌথ স্বাক্ষরে খোলা ব্যাংক হিসাবে রাখলেও তা প্রকল্প পরিচালক আব্দুস সবুর আনিছুর রহমানের চেক দিয়ে উত্তোলন করিয়েছেন। পরবর্তীতে টাকার বিষয়ে অনুসন্ধান হলে নিজে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে প্রকল্প পরিচালক এই কৌশল করেছেন।
এ বিষয়ে নিজের পক্ষে সাফাই গেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গাইবান্ধা বিআরডিবি অফিসের সাবেক হিসাবরক্ষক ও ‘গাইবান্ধা সমন্বিত দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্প’র হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আনিছুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রকল্প পরিচালক আব্দুস সবুরের বিরুদ্ধে অপকর্মে সহযোগিতা না করায় হয়রানির অভিযোগ তোলেন।
১৬ অক্টোবর করা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালে যোগদানের পর প্রকল্প বাস্তবায়নে একক সিদ্ধান্তে অর্থ ব্যয় করতে থাকেন প্রকল্প পরিচালক আব্দুস সবুর। এ বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং অনিয়মের প্রতিবাদ করলে তিনি আনিছুর রহমানের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং বরখাস্ত করার হুমকি দেন। আব্দুস সবুর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ হওয়ায় নিরুপায় হয়ে তার কথামতো বিভিন্ন কাজ এবং প্রকল্পের আয়-ব্যয়ের হিসাবের নথিপত্র প্রস্তুত করতে থাকেন। পরে আনিছুর রহমানকে ফাঁসাতে প্রকল্প পরিচালক তাদের যৌথ স্বাক্ষরে একটি হিসাব খোলেন এবং পরবর্তীতে সেটাকে কেন্দ্র করেই এক সময় প্রকল্প পরিচালক তাকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
সংবাদ সম্মলনে আরও উল্লেখ করা হয়, এর মধ্যে আনিছুর রহমানের পদোন্নতি হলে তাকে সাঘাটা উপজেলায় সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়। বদলির পর তিনি জেলা অফিসের নতুন হিসাবরক্ষক রাসেল সরকারকে চলতি বছরের ২১ জুলাই সকল দাপ্তরিক দায়-দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। এরপরও উপ-পরিচালক আব্দুস সবুর তার (আনিছুর) বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। শুধু তাই নয়, কর্তৃপক্ষের কাছে চাকরিচ্যুতি ও সামাজিকভাবে ক্ষতিসাধনের জন্য আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তথ্য উপাস্থাপন করেন। ফলে আনিছুর রহমান বরখাস্ত হন। বরখাস্তের পর তিন মাস বেতন বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে তিনি মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
একইসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের দাবিও জানান তিনি।
এসব ব্যাপারে জানতে আনিছুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিউজবাংলা। এ সময় ভারাক্রান্ত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমি নিরুপায়!’
অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন প্রকল্পের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আনিছুর রহমান। তবে তার দাবি, তিনি একা নন, প্রকল্প পরিচালক আব্দুস সবুরের যোগসাজসেই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
আনিছুর রহমান বলেন, “প্রকল্পের ৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকার মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে প্রকল্প পরিচালক নিয়েছেন পাঁচ লাখ টাকা। আমার কাছে রাখা অবশিষ্ট ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা আমি খরচ করেছি।
“এই পাঁচ লাখ টাকা ছাড়াও সাত উপজেলা থেকে একইভাবে ‘কাঁচামাল’ নামে খোলা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রায় চল্লিশ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন আব্দুস সবুর।”
তিনি বলেন, ‘এরপরও প্রকল্প পরিচালক আমার কাছে থাকা ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ফেরত চান। তবে আমি টাকা দেইনি। ফলে আমার ওপর ষড়যন্ত্র শুরু হয়। প্রকল্প পরিচালক তার কাছের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে আমার বিরুদ্ধে প্রায় দুই কোটি টাকা অনিয়মের মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। ফলে আমি বরখাস্ত হই।’
বরখাস্ত হওয়ার পর আনিছুর রহমানকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রকল্প পরিচালক একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। এর জবাব প্রকল্প পরিচালক আব্দুস সবুরকে না পাঠিয়ে ঢাকায় বিআরডিবি মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
লিগ্যাল নোটিশের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নোটিশের জবাব আমি প্রকল্প পরিচালককে নয়, মহাপরিচালকের কাছে পাঠিয়েছি। তাতে তার (প্রকল্প পরিচালক) সব অপকর্মের ঘটনা আমি ফাঁস করেছি।’
গত ৩০ অক্টোবর মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো আনিছুর রহমানের ওই লিখিত জবাবের একটি কপি এবং আরও বেশকিছু নথি নিউজবাংলার হাতে এসেছে।
লিখিত জবাবে আনিছুর রহমান উল্লেখ করেছেন, তিনি ২০১৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ২০ জুলাই পর্যন্ত বিআরডিবির গাইবান্ধা জেলা দপ্তরে হিসাবরক্ষক এবং গাইবান্ধা জেলায় বিআরডিবি কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘গাইবান্ধা সমন্বিত দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্প’র হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (অ. দা.) হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। এর মাঝে ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ উপ-পরিচালক হিসেবে গাইবান্ধায় যোগদান করেন আব্দুস সবুর। ওই বছরের ১৭ এপ্রিল গাইবান্ধার অগ্রণী ব্যাংকে ‘গাইবান্ধা সমন্বিত দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্প’ শিরোনামে প্রকল্পটির পরিচালকের কার্যালয়ের একটি মূল হিসাব খোলা হয়। হিসাবটি খোলা ও পরিচালিত হয় প্রকল্প পরিচালক আব্দুস সবুর ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রকল্পের জন্য ১ কোটি ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। ওই বছরের আয়-ব্যয় শেষে ২৮ জুন অব্যয়িত (খরচ না হওয়া) হিসেবে ৮ লাখ ১৯ হাজার ৪৩৬ টাকা গাইবান্ধা সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখায় জমা করা হয়। প্রকৃতপক্ষে ওই অর্থবছরে অব্যয়িত অর্থের পরিমাণ ছিল ১৯ লাখ ৭ হাজার ৭৭৬ টাকা। অবশিষ্ট ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৩৪০ টাকা পরবর্তীতে প্রকল্প পরিচালক আব্দুস সবুর প্রকল্পের মূল হিসাব থেকে ‘পল্লী বাজার’ নামে একটি নতুন হিসাব খুলে সেটিতে স্থানান্তর করেন। শেষ পর্যন্ত (২০২২ সালের ১০ আগস্ট) ওই হিসাবে ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৩০৬ টাকা রক্ষিত থাকে।
২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের জুন মাসে শেষ হয় ‘গাইবান্ধা সমন্বিত পল্লী দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্প’। এর মধ্যে ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন অডিট অধিদপ্তর থেকে প্রকল্পের শুরু থেকে ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত অর্থাৎ, ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পাদন হয়। নিরীক্ষাকালে অডিট কর্মকর্তা প্রকল্পের মূল হিসাব থেকে ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৩৪০ টাকা অন্য একটি হিসাবে স্থানান্তরের তথ্য পান। তবে ‘আর্থিক সমঝোতার মাধ্যমে’ নিরীক্ষা দল ‘পল্লী বাজার’ হিসাব নম্বরে কোনো স্থিতি (অবশিষ্ট টাকা) নেই মর্মে স্বাক্ষর করেন। অথচ ওই বছরের ৩০ জুন পর্যন্তও ওই হিসাব নম্বরে ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৩৮৬ টাকা স্থিতি ছিল।
এ ঘটনার বছরখানেক পর প্রকল্প পরিচালক আব্দুস সবুর ২০২২ সালের ১০ আগস্ট আগ্রণী ব্যাংকে একটি চিঠি দিয়ে হিসাবের নাম ‘পল্লী বাজার’ ঠিক রেখে হিসাব নম্বরটি বন্ধ করে নতুন একটি স্থায়ী হিসাব খোলার অনুরোধ জানান। চিঠি পেয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সে বছরের ১৬ আগস্ট ছয় মাস মেয়াদী একটি স্থায়ী আমানত হিসাব খোলে। পরে ওই স্থায়ী হিসাবটির মেয়াদও পূর্ণ হলে আব্দুস সবুর হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আনিছুর রহমানকে আমানতটি ভেঙে ক্যাশ করে আনতে বলেন। এ বিষয়ে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি ব্যাংকে একটি চিঠিও দেন। পরে আনিছুর রহমান তার ব্যক্তিগত চেকের মাধ্যমে ৯ লাখ ৭৪ হাজার ৯৬০ টাকা (স্থায়ী আমানতের মুনাফাসহ) উত্তোলন করে প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ে গিয়ে তার হাতে দেন।
২০২৩ সালের ২৬ জুন প্রকল্প পরিচালক একটি অডিট টিম গঠন করলে আনিছুর রহমান সকল আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করেন এবং ২৭ জুলাই জেলা কার্যালয়ের নতুন হিসাবরক্ষক রাসেল সরকারের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে নতুন পদায়নকৃত কর্মস্থল বিআরডিবির সাঘাটা কার্যালয়ে সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে ‘ছাড়পত্র ছাড়াই’ যোগদান করতে যান। কিন্তু ছাড়পত্র ছাড়া সাঘাটার ইউআরডিও সামিউল ইসলাম তাকে যোগদান করা হবে না মর্মে জানান বলে নথি থেকে জানা যায়। তারপরও তিনি এলপিসি ও ছাড়পত্র ছাড়াই সেখানে অফিস করতে থাকেন।
পরে উপ-পরিচালকের কাছে আনিছুর রহমান এলপিসি ও ছাড়পত্র চাইলে তিনি এবার সুযোগ পেয়ে বেঁকে বসেন। ছাড়পত্র ও এলপিসি দিতে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন উপ-পরিচালক আব্দুস সবুর। শুধু তাই নয়, টাকা না দিলে তার (আনিছুর) চাকরির ক্ষতিসহ পরিবারের ক্ষতি করারও হুমকি দেন।
উপ-পরিচালকের ক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনা করে পাঁচ লাখ টাকার একটি চেক আব্দুস সবুরকে দেন এবং তিন দিন পর চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপনের অনুরোধ জানান। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক পরের দিনই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে চেকটি উপস্থাপন করেন। ফলে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স না থাকায় চেকটি ডিজঅনার হয়। এতে তিনি আরও ক্ষেপে গিয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর আনিছুর রহমানকে অফিশিয়ালি একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন।
জবাব না দেয়ায় লোক মারফত দ্বিতীয় দফায় আবারও আনিছুর রহমানকে ডেকে লিগ্যাল নোটিশ মোতাবেক টাকা জমা দেয়ার হুমকি দেন আব্দুস সবুর। টাকা জমা না দেয়ায় চার মাস আগে আনিছুরের এলপিসি বন্ধ করে দেন উপ-পরিচালক আব্দুস সবুর। ফলে গত চারমাস ধরে পরিবার নিয়ে আর্থিক সংকটে রয়েছেন বলে জবাবে উল্লেখ করেন আনিছুর রহমান।
শুধু তাই নয়, প্রকল্প পরিচালক ২০১৮ সালে যোগদানের পর থেকে চলতি ৫ বছরে তার (আব্দুস সবুর) অনুগত লোকদের নিয়ে গাইবান্ধায় একটি চক্র গড়ে তুলেছেন। এছাড়া তিনি শুধু প্রকল্পের টাকাই নয়ছয় করেননি, তিনি রাজস্ব খাতের লক্ষাধিক টাকাও তিনি হজম করেছেন বলে জবাবে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া আব্দস সবুর ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর সদর দপ্তরের জিপ গাড়ি মেরামত বাবদ পাওয়া ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা জনতা ব্যাংক গাইবান্ধা শাখার একটি গোপনীয় হিসাব নম্বরে জমা করেন। কিন্তু পরে গাড়ি মেরামত না করেই সমুদয় টাকা হস্তগত করেন তিনি। এ ঘটনা বিআরডাবির ২০২২ সালের জুনে হওয়া অডিট দলের কাছে গোপন করা হয়েছে বলেও জবাবে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে গাইবান্ধা পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের উপ-পরিচালক ও ‘গাইবান্ধা সমন্বিত দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্প’র পরিচালক মো. আব্দুস সবুরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। এ সময় তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উকিল নোটিশ আমরা করেছি, জবাব আমাদেরকেই দিতে হবে। ওখানে (মহাপরিচালকের দপ্তরে) দিয়ে তো লাভ নেই। ওখানে দিয়ে থাকলে সেটা তার ব্যাপার।’
সেখানে তো (জবাবে) আপনার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তুলেছেন- এমন প্রশ্নে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘সেটাতো করবেই এখন। বিভিন্ন বিষয় ধরা পড়েছে। সব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
এ ব্যাপারে বিআরডিবির মহাপরিচালক (গ্রেড-১) আ. গাফফার খান মুঠোফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিআরডিবি অনেক বড় দপ্তর। গাইবান্ধার আনিছুর রহমানের একটি পত্র সম্ভবত এসেছে। আমরা তার অভিযোগের বিষয়গুলো অবশ্যই খতিয়ে দেখব। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। এটি শেষ হলে পরে আমরা তার ব্যাপারটিও দেখব।’