বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চবির অডিও কেলেঙ্কারি: সিন্ডিকেটে শাস্তি কার্যকরের সিদ্ধান্ত

  • প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়   
  • ১ নভেম্বর, ২০২৩ ১৬:১৪

সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সিন্ডিকেট রিপোর্ট পর্যালোচনা করে খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীন রবিনকে উপাচার্য দপ্তর থেকে বদলির সুপারিশ করে এক গ্রেড ডিমোশন দিয়েছে। সিন্ডিকেট মনে করেছে তাকে এক গ্রেড ডিমোশন দিতে হবে। কর্মচারী আহমদ হোসেনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে একটি মামলা করবে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবির) ফারসি বিভাগের অডিও কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তি কার্যকরের সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪৫তম সিন্ডিকেট সভায় সোমবার ও মঙ্গলবার দ্বিতীয় তদন্ত কমিটির রিপোর্টের আলোকে শাস্তি প্রদানের সুপারিশ করা হয়।

এতে অভিযুক্ত উপাচার্যের দপ্তরের সহকারী খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীনকে ডেপুটি রেজিস্ট্রার থেকে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে পদাবনতি দেয়া হয়।

অপরদিকে অ্যাকাউন্টস শাখার কর্মচারী আহমদ হোসেনকে চাকুরিচ্যুত করা হয়। খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীন ও আহমেদ হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে মামলা করার সুপারিশ করে সিন্ডিকেট।

এ ছাড়াও শিক্ষক নিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ নথি হারানোর দায়ে উপাচার্য দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. সাহাবুদ্দিনকে সতর্ক করে উপাচার্যের কার্যালয় থেকে বদলির জন্য সুপারিশ করা হয়।

একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

‘অডিও কেলেঙ্কারি’র বিষয়ে চবির ‘অডিও কেলেঙ্কারি’: মামলা করতে বছর পার শিরোনামে নিউজবাংলায় সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। যেখানে বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ফোনালাপ ফাঁসের পর প্রথম তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী ৫৩৮তম সিন্ডিকেটে (জরুরি) উপচার্য শিরীণ আখতারের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীনকে পদাবনতি (ডিমোশন) ও কর্মচারী আহমদ হোসেনকে চাকরিচ্যুত করার সুপারিশ করে।

এই ঘটনার ‘নেপথ্যের কারিগরদের’ বের করতে পিএস রবিন ও কর্মচারী আহমদ হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করে জরুরি ভিত্তিতে থানায় ফৌজদারি মামলা করার জন্য সুপারিশ করা হয়।

সেই সিন্ডিকেট সভায় দুইজনের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশের পাশাপাশি অধিকতর যাচাই-বাছাই করার লক্ষ্যে দ্বিতীয় আরেকটি তদন্ত কমিটি করা হয়। দ্বিতীয় তদন্ত কমিটির রিপোর্টের আলোকে এ বিষয়ে তাদের শাস্তি কার্যকর হবে।

দ্বিতীয় তদন্ত কমিটির রিপোর্টের একটি কপি নিউজবাংলার হাতে এসেছে, যেটি সর্বশেষ সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করা হয়।

রিপোর্টে লেখা হয়, চাকরি প্রার্থীর সঙ্গে খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীন এর স্বতঃস্ফূর্ত ও অত্যন্ত আপত্তিকর, অযাচিত ও এখতিয়ার বহির্ভূত কথোপকথনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মারাত্মক মর্যাদাহানি হয়েছে। এসব কথোপকথনের কোনো গ্রহণযোগ্য ও যৌক্তিক ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি। ফাঁস হওয়া ফোনালাপের বিষয়ে প্রথম কমিটির পর্যবেক্ষণ সঠিক বলে কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীনের কর্মকাণ্ড গুরুতর অসদাচরণ (মিসকন্ডাক্ট) হওয়ায় তাকে চ.বি. সংবিধি ১২ এর ধারা ৪ এর ১ (ডি) অনুযায়ী স্থায়ীভাবে (ভবিষ্যতে কোনো পদোন্নতি পাবেন না) দুই গ্রেড পদাবনতি দিয়ে উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থেকে সেকশান অফিসার করার ও অবিলম্বে প্রশাসনিক ভবনের বাইরে বদলির জন্য গঠিত কমিটি সর্বসম্মতভাবে সুপারিশ করে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পুরোপুরি অনুসরণ করেনি সিন্ডিকেট।

এদিকে নাম প্রাকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিন্ডিকেট সদস্য বলেন, ‘অসদাচরণ করার জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। তবে আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয় সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হয়নি। তার অসদাচরণের বিষয়টি প্রমাণ হওয়ায় তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে আরেক সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সিন্ডিকেট রিপোর্ট পর্যালোচনা করে খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীন রবিনকে উপাচার্য দপ্তর থেকে বদলির সুপারিশ করে এক গ্রেড ডিমোশন দিয়েছে। সিন্ডিকেট মনে করেছে তাকে এক গ্রেড ডিমোশন দিতে হবে। কর্মচারী আহমদ হোসেনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে একটি মামলা করবে।’

অন্যদিকে উপাচার্য দপ্তরের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ফাইল হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে উপাচার্য দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনসহ তৎকালীন কর্মকর্তা-কর্মচারীর দায় খুঁজে পায় কমিটি।

তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ফাইল হারানোর দায়ে মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিনসহ উপাচার্য দপ্তরে কর্মরত তৎকালীন অন্যান্য কর্মকর্তা/কর্মচারী কোনোভাবে এড়াতে পারেন না। এ ছাড়া এ সংক্রান্ত সকল তথ্য মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন তদন্ত কমিটির কাছে পুরোপুরি গোপন করেছেন যা অবাধ্যতা ও অসহযোগিতা।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি সুপারিশ না করলেও সিন্ডিকেট থেকে সর্বসম্মতিক্রমে মো. সাহাবুদ্দিনকে সতর্ক করাসহ উপাচার্য দপ্তর থেকে বলদির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ আলী।

এ বিভাগের আরো খবর