চট্টগ্রামে দুই বছর বয়সী ভাগ্নেকে অপহরণের পর ১ লাখ টাকা চুক্তিতে বিক্রি করে দিয়েছে আপন মামা। বিক্রির সেই টাকা দিয়ে কিনেছেন মোবাইল ফোন, খাট, পাখাসহ নানান জিনিসপত্র। তবে শেষ রক্ষা হয়নি মামার! সহযোগীসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন তিনি। উদ্ধারের পর মায়ের কোলে ফিরেছে অপহৃত শিশুটিও।
সোমবার রাত দুটার দিকে নগরীর পাথরঘাটা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মুজিবুর রহমান ওরফে মজিদ নামের ওই ব্যক্তিকে। স্ত্রীসহ মজিদকে গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার নরসিংদী থেকে শিশুটিকে উদ্ধার ও আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অপহৃত শিশুর নাম ইসমাইল হোসেন। আর অপহরণের দায়ে গ্রেপ্তার তিনজন হলেন ভোলার মনপুরা থানার ভাসানখালী এলাকার ২২ বছর বয়সী মুজিবুর রহমান ওরফে মজিদ (মামা), মজিদের স্ত্রী ২০ বছর বয়সী আরজু আক্তার এবং নরসিংদী সদর থানার বগারগত এলাকার ৪৫ বছর বয়সী মো. আবুল কালাম।
পুলিশ জানায়, শনিবার দুপুর ১টার দিকে কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা ব্রীকফিল্ড রোড থেকে নপুর আক্তার বৃষ্টি নামের এক নারীর ২ বছরের শিশু ইসমাইলকে অপহরণ করা হয়। ওই শিশুকে কৌশলে অপহরণ করে তারই আপন মামা মোহাম্মদ মুজিব ওরফে মজিদ। পরবর্তীতে বৃষ্টি সম্ভব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে সোমবার কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। এরই প্রেক্ষিতে ওইদিন রাত আড়াইটার দিকে কর্ণফুলী থানার চর পাথরঘাটা থেকে মজিদ ও আরজুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
দুই বছর বয়সী ইসমাইল হোসেন। ছবি: নিউজবাংলা
কোতোয়ালী থানার ওসি জাহেদুল কবির বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর মজিদ ও আরজুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে তারা অপহরণের কথা স্বীকার করেন এবং জানান, আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে ওই শিশুকে নরসিংদী সদর উপজেলার বগারগত এলাকায় এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে ১ লাখ টাকায় বিক্রি করেছে। পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্যে আবুল কালামকে আটক ও নরসিংদী সদর উপজেলার বগারগত এলাকা থেকে অপহৃত শিশু ইসমাইলকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।’
ওই শিশুকে অপহরণের অভিযোগে করা মামলার তদন্ত ও আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযানের দায়িত্বে ছিলেন কোতোয়ালী থানার উপপরিদর্শক নয়ন বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘মজিদ লোকটা মূলত বেকার। তার কোনো উপার্জন নেই। ধার-কর্জ করে চলে। আমাদের ধারণা ড্রাগও নেয় সে।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘১ লাখ টাকা চুক্তি হলেও প্রাথমিকভাবে সে পেয়েছে ২০ হাজার টাকা। এই টাকা দিয়ে সে মোবাইল, খাট, পাখাসহ বিভিন্ন জিনিসপাতি কিনেছে।’
উদ্ধার শিশু ও গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে শিশুটিকে মায়ের কাছে ফেরত দেয় আদালত, তাছাড়া গ্রেপ্তার আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।