বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হাসান সারওয়ার্দী গ্রেপ্তার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ৩১ অক্টোবর, ২০২৩ ১৮:০১

মঙ্গলবার বিকেলে সাভারের বাসায় অভিযান চালিয়ে এই সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেয়া মিয়ান আরেফিন, বিএনপি নেতা ইশরাফ হোসেন ও হাসান সারওয়ার্দীকে আসামি করে হওয়া মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সাভারের বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হাসান সারওয়ার্দীকে সাভারের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ডিএমপি ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারন অর রশিদ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার বিকেলে এই গ্রেপ্তার অভিযান চালায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মিথ্যা পরিচয় দিয়ে অন্যের রূপধারণ করে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে করা পল্টন থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি।

সারওয়ার্দীকে ছাড়া হবে না- প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে মঙ্গলবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথিত উপদেষ্টার ঘটনায় সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার এবং জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দেন।

শনিবার সন্ধ্যায় (২৮ অক্টোবর) পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের পরপরই জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়ে মিয়ান আরাফি নামের এক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে হঠাৎ বিএনপির পল্টন কার্যালয়ে আসেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট জেনারেল হাসান সারওয়ার্দী। এ সময় সংঘর্ষে আহত বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন ওই ব্যক্তি। পরে সেখানে থাকা সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন ওই রহস্যজনক ব্যক্তি।

এ বিষয়ে এক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘তাকেও (হাসান সারওয়ার্দী) ছাড়া হবে না। আমি তাকে গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছি।’

যে মামলায় গ্রেপ্তার

রোববার রাতে মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে এ মামলা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পল্টন থানার ওসি মো. সালাহউদ্দীন মিয়া।

আসামিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন বাদী।

এজাহারে বলা হয়েছে, শনিবার পূর্ব ঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারা দেশ থেকে দলটির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। তারা প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা এবং সরকারি গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। এতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। এক পর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে কিছু সংবাদমাধ্যমের সামনে মিয়ান আরেফি নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে বক্তব্য দেন তিনি।

সেখানে মিয়ান আরেফি বক্তব্যে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দিনে ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগ হয় এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। তিনি আরও দাবি করেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরকেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।

এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, হাসান সারওয়ার্দী এবং ইশরাক হোসেন তাকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উসকানি দেন। মিয়ান আরেফি তাদের সহায়তায় সরকারের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি করে সারা দেশে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।

এজাহারের তথ্যমতে, ওই সংবাদ সম্মেলনে একপর্যায়ে মিয়ান আরেফির বক্তব্য শুনে এবং ভিডিও দেখে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে। বিএনপি নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়াতে আসামিরা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করেছেন।

আমেরিকার পাসপোর্টধারী মিয়ান আরেফির প্রকৃত নাম মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফি। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। শনিবার বিএনপির কার্যালয়ে মিথ্যা পরিচয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার পর রোববার বিকেলে তিনি দেশছাড়ার চেষ্টা করেন। তবে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে ডিবি পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

এ বিভাগের আরো খবর