নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের মধ্যে রাজধানীর ফকিরাপুল চার রাস্তার মোড়ে হামলার শিকার হয়ে এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। নিহত পুলিশ সদস্যের নাম আমিরুল ইসলাম পারভেজ। পারভেজ ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটে কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন।
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারী ইউনিয়নের বোটঘর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার আলী মোল্লার বড় ছেলে নিহত পুলিশ সদস্য পারভেজ। সম্প্রতি নদী ভাঙনের কবলে পড়ে নাগরপুরে বাড়ি করেছেন তারা।
জানা যায়, ২০০৯ সালে পুলিশে যোগদান করেন আমিরুল ইসলাম পারভেজ। তারা দুই ভাই। চাকুরির সুবাদে পারভেজ পরিবার নিয়ে ঢাকাতেই থাকেন। গ্রামের বাড়িতে তার বৃদ্ধ বাবা-মা ও ভাই থাকে। ২০১২ সালে মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার বোলদার ইউনিয়নে তিনি বিয়ে করেন। তার ৬ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। পারভেজের একমাত্র মেয়ে তানহার ভবিষ্যত জীবনও অনিশ্চিয়তার পড়ে গেল।
এদিকে ছেলের মৃত্যুতে বৃদ্ধ বাবা-মা ও তার স্ত্রীসহ বাড়ির লোকজন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তাদের কান্না ও আহাজারিতে যেন আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে চোখে অন্ধকার দেখছেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পারভেজের মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন পারভেজের একমাত্র বোন শেফালী আক্তার। মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন তিনি। ভাইয়ের মৃত্যুতে তারা কীভাবে থাকবেন? কে চালাবে তাদের সংসার?
নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম ফিরোজ সিদ্দিকী বলেন, ‘সংঘর্ষে নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। ওই পুলিশ সদস্যের বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় ছিল। কিন্তু নদী ভাঙনে তাদের বসতভিটা হারিয়ে পার্শ্ববর্তী দপ্তিয়র ইউনিয়নের ফয়েজপুর গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন।’
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, ‘ওই পুলিশ সদস্যের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকায় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তার গ্রামের বাড়িতে আনা হবে। নিহতের পরিবার যেভাবে চাইবে সেভাবেই তার দাফন হবে।’
তিনি জানান, পারভেজের জানাজার নামাজ ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোসহ সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসময় নিহতের শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেন তিনি।