নওগাঁর বদলগাছীতে বাড়ির সামনে ঘাস কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় দুজন গুরুতর আহত হয়।
উপজেলার বালুভরা ঢেকরা গ্রামে গত ২১ অক্টোবর (শনিবার) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের ঘটনায় বদলগাছী থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে উল্লেখ আছে, বদলগাছী উপজেলার বালুভরা ঢেকরা গ্রামের শ্রী কালিপদ চন্দ্র সরকার তার বাড়ির সামনের মাটির রাস্তায় পূজা উপলক্ষে ঘাস পরিষ্কার করছিলেন। তখন রাস্তার পাশের জমির মালিক খাজামুদ্দীন সর্দার ও তার ছেলে আতিকুর সরদার ঘটনাস্থলে এসে ঘাস পরিষ্কার করতে বাধা দেন।
ওই সময় উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয় ও একপর্যায়ে খাজামুদ্দীনের নাতি সোহান বাড়ি থেকে লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কয়েকজন মিলে শ্রী কালিপদ সরকার, তার স্ত্রী সুশিলা রানীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কোপ দেন। এতে করে সুশিলা রানীর মাথার অনেক অংশ কেটে রক্তাক্ত জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে বিবস্ত্র করে মারপিট করা হয়।
মামলায় আরও উল্লেখ আছে, শ্রী কালিপদ সরকারের মাথায় কোপ দিলে তিনি আহত হয়ে মাটিতে পড়ে যান। ওই সময় তাদের চিৎকারে কালিপদের ছেলে ও ছেলের বউ এগিয়ে গেলে তাদের ও মারপিট করে পালিয়ে যান তারা।
এ ঘটনায় আহরা চার দিন হাসপালে ভর্তি ছিলেন।
শ্রী কালিপদ চন্দ্র সরকারের ছেলে অজয় কুমার বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা করেন।
পাঁচজন হলেন, বদলগাছী উপজেলার চক প্রধানকুন্ডি গ্রামের খাজামুদ্দীন সর্দার ও তার ছেলে আতিকুর সর্দার, একই গ্রামের সোহান, আঞ্জুয়ারা বেগম ও তার ছেলে মেহেদী হাসান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঢেকরা গ্রামের মিস্টি রানী বলেন, ‘পূজার জন্য বাড়ির আশপাশ সবাই পরিষ্কার করে, সে জন্য কালিপদ কাকা বাড়ির সামনের রাস্তায় ঘাস জঙ্গল পরিষ্কার করছিলেন। তখন খাজামুদ্দীনের ছেলে আতিকুর গিয়ে বাঁধা দেয় ও বাড়িতে ফোন করে সবাইকে আসতে বলে।’
স্থানীয় সুকুমল এক বাসিন্দা বলেন, ‘ছোট একটা মাটির রাস্তা এক পাশে খাজামুদ্দীনের জমি অন্য পাশে হিন্দুদের বাড়ি। জমিতে কাজ করতে এসে তারা প্রায় বলে এখানে হিন্দুদের থাকতে দেয়া হবে না। এদের তাড়াতে হবে। বাড়ির সামনে মাটির রাস্তা হলে ঘাস জঙ্গল হবে, রাস্তার ঘাস পরিষ্কার করা নিয়ে তারা এই হিন্দু মানুষ গুলাকে পিটিয়েছে।’
কালিপদ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘আমি কোদাল দিয়ে রাস্তার ঘাস পরিষ্কার করছিলাম। ওই সময় আতিকুর এসে বাঁধা দেয়, আমি তাকে বলি আমি তো রাস্তার ঘাস পরিষ্কার করছি। তোমার জমির মাটি তো কাটছি না, বা তোমার জমিতে পাও দেইনি তোমার এতে সমস্যা কী? এতে করে সে আমর ওপর চটে গিয়ে বাসার সবাইকে ডেকে আনে তারপর আমার ওপর হামলা করে।’
মামলার বাদী অজয় কুমার বলেন, ‘তারা আমার মা বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। আমি বাইরে ছিলাম খবর পেয়ে আমি ছুটে আসলে তারা আমাকেও মারধর করে। বর্তমানে আমার মায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ঘটনার পুরো বিবরণ উল্লেখ করে পুলিশের কাছে মামলা করি। কিন্তু পুলিশ মামলাটি উল্টোভাবে সাজিয়েছে তারা খাজামুদ্দীন ও তার ছেলেকে বাদ দিয়ে খাজামুদ্দীনের নাতির ওপর হত্যা চেষ্টার আরোপ করেছে। আমরা তো মূর্খ মানুষ এত বুঝি না।’
অভিযোগের বিষয়ে খাজামুদ্দীনের ছেলে আতিকুর সর্দার বলেন, আমাদের জমি থেকে ওরা মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছিল, আমরা মাটি তুলতে নিষেধ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে একটা গন্ডগোল হয়। উভয় পক্ষই মামলা করেছে বিষয়টি স্থানীয় এমপি মহোদয় জানেন তিনি সমাধান করে দেবেন।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আশরাফুল আলম বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি একজনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করেছি।’