দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর নিচ দিয়ে নির্মিত প্রথম টানেলের দ্বার খুলছে আজ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন করবেন।
টানেল উদ্বোধন ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আনন্দে মেতেছে আনোয়ারা-কর্ণফুলীর মানুষ। তাদেরই একজন আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মুসা তালুকদার। এলাকায় মুসা মেম্বার হিসেবে পরিচিত তিনি।
বঙ্গবন্ধু টানেলে সংযোগ সড়কের ৫০০ গজের মধ্যেই তার বাড়ি। টানেলের সংযোগ সড়কে ৭০ শতকের বেশি জমি পড়েছে মুসা মেম্বারের।
মুসার ভাষ্য, নানা জটিলতায় এখনও জমি অধিগ্রহণের পুরো অর্থ বুঝে পাননি তিনি, তবে তাতেও দুঃখ নেই মনে। তার কাছে টাকা বড় কথা নয়, তার জমির ওপর দিয়ে টানেল হয়েছে এটাই তার জন্য গর্বের বিষয়।
এ বিষয়ে মুসা মেম্বার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কাল টানেল উদ্বোধন, এখানে আমার ৭০ শতকের বেশি জমি পড়েছে। নানা জটিলতায় এখনও চেক পাইনি, কিন্তু টাকাটা বড় কথা নয়। আমি দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে গিয়ে একদিন গর্ব করে বলব, আমার জমির ওপর টানেল হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধু টানেল পুরো এলাকার মানুষের জীবনাচার বদলে দিয়েছে জানিয়ে মুসা মেম্বার বলেন, ‘টানেলের কারণে জায়গা-জমির দাম বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। বিভিন্ন বিনিয়োগকারীরা এখানে বিনিয়োগ করতেছে। উন্নয়ন এখানে আকাশচুম্বী, বলার বাইরে। টানেল নিয়ে আমরা সবাই আনন্দিত। এখানে সবার জীবন বদলে যাবে টানেল ঘিরে।’
সেতু বিভাগের তথ্যা অনুযায়ী, দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে যোগাযোগের স্বর্ণদ্বার খ্যাত বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণে দুই হাজারের বেশি মালিকের প্রায় ৩৮৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। তবে নতুন করে টানেলের দুপ্রান্তে স্ক্যানার বসানোর সিদ্ধান্তে আরও ৬ দশমিক ৯৩১ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে এখনও চার শতাধিক মালিক অধিগ্রহণের অর্থ বুঝে না পেলেও জেলা প্রশাসন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে নেয়া হয়েছে।
এদিকে টানেল উদ্বোধন ও প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। সবকিছু ঠিকঠাক আছে। টানেল উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারায় জনসভাতে বক্তব্য দেবেন, জনসভায় দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও মহানগরের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করবেন।’
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং টানেল নির্মাণকোজের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এরপর ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেলে টিউব নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। টানেলটির নির্মাণ কাজ করছে চীনা কোম্পানি ‘চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’।
শুরুতে প্রকল্প ব্যয় ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা ধরা হলে ২০১৭ সালে তা বাড়িয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা করা হয়।