ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে মা ও দুই ছেলেকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় কেঁপেছে অনেকের হৃদয়। সবারই চাওয়া ছিল- লোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আসুক। আর পুলিশি তৎপরতায় হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ধরা পড়েছে মামলার প্রধান আসামি জহিরুল হক।
মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর মাধবদী থেকে জহিরুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নিহত জেকি আক্তারের বাবা আবুল হোসেনের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার সকাল ৯টায় তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ওসি নূরে আলম এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জহিরুল ইসলাম নিহত জেকি আক্তারের বড় বোনের মেয়ে জামাতা। তার বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী থানার আলগীরচর গ্রামে। বাবার নাম আব্দুল খালেক।
আইয়ুবপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার বলেন, ‘জেকির ভগ্নিপতি এই ট্রিপল মার্ডারের ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। পরিবারের মাধ্যম জেনেছি যে জেকির বড় বোন শিল্পীর মেয়ে আনিকা আক্তারের সঙ্গে বিয়ে হয় জহিরুল ইসলামের। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই শ্বশুর বাড়িতে সমস্যা শুরু হয়। সেজন্য বেশিরভাগ সময়ই আনিকা শ্বশুরবাড়িতে না থেকে মায়ের কাছে থাকত। আর জহিরুল এই বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করত।’
ওই ওয়ার্ড মেম্বার বলেন, ‘জহিরুল সোমবার সকালে জেকির বাড়িতে আসে এবং নাস্তা খেয়ে চলে যায়। আবার সে রাত ৮টার দিকে আসে। জহিরুলের এই বাসায় আসার বিষয়টি যেন তার স্ত্রী বা শাশুড়িকে জানানো না হয় সে ব্যাপারে সে তার খালাশাশুড়িকে বলে যায়।
‘এদিকে জেকি বিষয়টি তার বোন শিল্পী ও তার মেয়ে আনিকাকে জানিয়ে দিলে ক্ষুব্ধ হয় জহিরুল। আর সেই ক্ষোভ থেকেই সে জেকি ও তার দুই ছেলে সন্তানকে হত্যা করে। পরে মাধবদীতে নিজ বাড়িতে চলে যায় সে। পুলিশ মঙ্গলবার রাতে সেখান থেকেই তাকে আটক করেছে বলে জানতে পেরেছি।’
মামলার বাদী আবুল হোসেন বলেন, ‘আমার মেয়ে ও নাতিদেরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে জহিরুল। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বসতঘর থেকে প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী জেকি আক্তার এবং তাদের দুই শিশু সন্তান মাহিন ও মহএনর গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চর ছয়ানি দক্ষিণপাড়া গ্রামের প্রবাসীর শাহ আলমের পাকা বাড়ি থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।