রাজশাহীতে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে তারই বন্ধুর দেয়া তথ্যে। টাকার জন্য অপহরণ করে হত্যার পর তাকে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ভোরে ৩৮ বছর বয়সী মাহফুজুর হোসেন ওরফে সজলের মরদেহ উদ্ধার হয়। তিনি রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম মুন্সিপাড়া এলাকার মোহাম্মদ মর্তুজা হোসেনের ছেলে।
সজলকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪০ বছর বয়সী মোহাম্মদ আরিফুল হক চৌধুরী ওরফে রিপনের বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার আবদুলপুর গ্রামে। মৃত হামিদুল হকের ছেলে তিনি। রাজশাহী নগরীর শাহমখদুম থানার সন্তোষপুর এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন রিপন।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, নিহত সজল ও আসামি রিপন দুই বন্ধু। প্রায় ছয় বছর ধরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল। পারিবারিকভাবেও তাদের যাওয়া আসা ছিল।
তিনি জানান, রিপনকে গ্রেপ্তারের পর হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসে এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার ভোর রাতে সেপটিক ট্যাংক থেকে সজলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি জানান, তিন তলায় তার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে হত্যার পর মরদেহ ফেলা হয় বাড়ির পেছনে। এরপরই সেটিকে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়া হয়। এই ঘটনার সঙ্গে সজলের জড়িত থাকার তথ্য নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
তিনি জানান, আরও কারা জড়িত আছে সেটা বের করার জন্য কাজ চলছে। এ ঘটনায় তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাক জানান, সজলের বাবা মর্তুজা হোসেন বুধবার নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১ অক্টোবর থেকে সজল নিখোঁজ রয়েছে, তাকে অপহরণ করা হয়েছে। সজলকে ফিরিয়ে দিতে অপহরণকারীরা প্রথমে ১ কোটি এবং পরে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে পরিবারের কাছে।
এই জিডির পর নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানা ও গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জানতে পারে, মুক্তিপণ দাবি করা ব্যক্তির অবস্থান রিপনের ভাড়া বাসায়। এই সূত্র ধরে রিপনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রিপন পুলিশের কাছে স্বীকার করে, ২ অক্টোবর রিপনকে হত্যা করে মরদেহ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়া হয়েছে।
পরে বৃহস্পতিবার ভোররাতে কাশিয়াডাঙ্গা ও শাহমখদুম থানা এবং ডিবি পুলিশ রিপনকে নিয়ে তার ভাড়া বাসায় অভিযানে যায়। এ সময় রিপনের দেখানো তথ্য অনুযায়ী তার বাড়ির পেছনে সেপটিক ট্যাংক থেকে সজলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিজয় বসাক জানান, এ ঘটনায় রিপনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা করেছেন নিহত ব্যক্তির বাবা। সজলের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।