গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (জিসিসি) প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মনজুর হাসানকে কার্যালয়ে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নগর ভবনে নিজ কক্ষে বহিরাগত কয়েকজন ও ঠিকাদারের হাতে তিনি লাঞ্ছিত হন। এর পরপরই প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা নগর ভবন ছেড়ে চলে যান।
এ ঘটনার জন্য সিটি করপোরেশনের হিসাবরক্ষণ কর্মর্কতা গোলাম কিবরিয়াকে দায়ী করেছেন মনজুর হাসান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নগর ভবনের একাধিক সূত্র জানায়, বেশ কিছুদিন নগর ভবনে অনুপস্থিত ছিলেন প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মনজুর হাসান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ সেপ্টেম্বর সিটি করপোরেশনের সচিব আব্দুল হান্নান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ জারি করা হয়।
ওই আদেশে উল্লেখ করা হয়, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মনজুর হাসানের অনুপস্থিতিকালীন সময়ে প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার দায়িত্বসহ হিসাব বিভাগের সব নথিপত্র এবং যাবতীয় কাজ করবেন হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার অফিসে আসেন সিটি প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মনজুর হাসান। বেলা দুইটার দিকে নিজ কক্ষ থেকে বাইরে আসতে চাইলে কয়েকজন ঠিকাদার প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মনজুর হাসানকে ধাক্কা দিয়ে তার কক্ষে ঢোকান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, এ সময় তারা একটি ফাইলে দ্রুত স্বাক্ষর করে দেয়ার জন্য প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে চাপ দেন। কিন্তু তিনি ফাইলটি যাচাই-বাছাই করে স্বাক্ষর করে দেবেন বলে জানালে তারা অসন্তুষ্ট হন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বহিরাগত লোকজন ও ঠিকাদাররা প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
এ বিষয়ে প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মনজুর হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফোনে তিনি বলেন, ‘নগর ভবনের হিসাব শাখায় কিবরিয়া নামে একজন আছেন তিনি আমার কথা শোনেন না। এটা আসলে মেয়রের লোকজনই করেছেন, কিন্তু প্রধান ইন্ধনদাতা কিবরিয়া।’
অভিযুক্ত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মনজুর হোসেন আমার রুমে এসে আমাকে এবং আমাদের স্টাফদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। এ সময় তিনি আমার কাছে জানতে চান কেন আমি তার ফোন রিসিভ করিনি। তিনি উচ্চস্বরে আমার সঙ্গে রাগারাগি করছিলেন। এ সময় রুমের বাইরে বারান্দায় বহিরাগত লোকজন ছিল। তারা উনাকে হাত ধরে উনার রুমে নিয়ে গেছেন।
‘শুনেছি বাইরের ওই লোকজনদের সঙ্গেও তিনি খারাপ আচরণ করেছেন। এর বাইরে আমি কিছুই জানি না। নগর ভবনে সিসি ক্যামেরা আছে, সেটি যাচাই করলে অবশ্যই দেখা যাবে কি ঘটেছে সেখানে।’
এ বিষয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম শফিউল আজম বলেন, ‘জাইকার একটি কনফারেন্সে থাকায় আজকে আমি অফিসে যাইনি। যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে এটি একটি ক্রিমিনাল অফেন্স। অবশ্যই তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’