মাদারীপুরের কালকিনিতে স্ত্রীর স্বীকৃতি পাওয়ার দাবিতে স্বামীর কর্মস্থল মাদ্রায় অবস্থান নিয়েছেন এক গৃহবধু।
রোববার দুপুরে উপজেলার ডিক্রিরচর ফাজিল মাদ্রাসায় অবস্থান নেন ওই গৃহবধু। মাদ্রাসা অধ্যক্ষের ছত্রছায়ায় ওই প্রভাষক এ ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছে বলে এলাকায় অভিযোগ রয়েছে।
স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন ওই গৃহবধু। বিচারের দাবিতে এখন বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।
ভূক্তভোগী দাবি করা ওই নারীর অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার ডিক্রিরচর ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে অনার্স পড়াকালিন ওই নারীর পরিচয় হয়। পরে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সুবাদে প্রায় সাত বছর আগে শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের এক পরিচিত লোকের মাধ্যমে কাবিননামা তৈরি করে বিভিন্ন স্থানে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে ওই শিক্ষক তার (ভুক্তভোগী) খোঁজখবর নেয়া বন্ধ করে দেন। পরে তার (শিক্ষক) সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানান প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান। স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেয়ে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন ওই গৃহবধু। অভিযোগ পেয়ে প্রভাষকের বেতন বন্ধ করে তাকে পুনরায় ভুক্তভোগী নারীকে কাবিন করে বিয়ে করার জন্য নির্দেশনা দেয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা। কিন্তু তাতেও কর্ণপাত করেননি ওই প্রভাষক। এখন বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভুক্তভোগী।
তবে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের ছত্রছায়ায় থেকে ওই প্রভাষক অপকর্ম চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভূক্তভোগী দাবি করা ওই নারী বলেন, ‘সরলতার সুযোগ নিয়ে মোস্তাফিজ আমার সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। আমি তার স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি চাই। এর আগেও বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছে মোস্তাফিজ।’
একাধিক বিয়ের বিষয়টি স্বীকার করে প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ওর যা মন চায় করুক। আমি কাউকে ভয় পাই না।’
এ বিষয়ে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. ফজুলর রহমান বলেন, ‘আমরা ওই শিক্ষককের বেতন বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তবে বিষয়টি উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে বসে সমাধানের জন্য সভাপতি নির্দেশনা প্রদান করেছেন।’
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এনামুল বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা কয়েকবার বসেছিলাম। কিন্তু এখনও কোনো সমাধানে পৌঁছতে পারিনি।’
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম বলেন, ‘এতবড় অপরাধ করে শিক্ষক কী করে পার পাওয়ার চিন্তা করেন? এটা সত্যিই দুঃখজনক ঘটনা।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পিংকি সাহা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ওই মাদ্রাসার সভাপতির সঙ্গে আমি কথা বলব।’