বর্তমান সরকার কাউকে ভোট দিতে দেয় না, বরং সবকিছু জোর করে কেড়ে নেয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা রাস্তায় নেমেছি, পদযাত্রা করছি, রোডমার্চ করছি। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে আছি। কথা পরিষ্কার, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। আমরা তো বেশি কিছু চাইনি। শুধু চেয়েছি সরকার পদত্যাগ করে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দিক। যেন জনগণ ভোট দিতে পারে।’
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। সরকারের পদত্যাগসহ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করে দলটি।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনার কানের সমস্যার কারণে আমেরিকায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল- আমরা কিন্তু ভুলে যাইনি। আর আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এটা জীবন-মরণ বিষয়। কিন্তু সরকার তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে না।
‘এই মুহূর্তে দেশে যদি কেউ নির্যাতিত, বঞ্চিত থাকেন, তিনি বেগম খালেদা জিয়া। তাকে যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আটকে রেখেছে সরকার, তা কিন্তু আমরা জানি। তিনি (বেগম জিয়া) একজন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। তার ডাকে কোটি কোটি মানুষ বেরিয়ে আসত। অথচ এই ফ্যাসিস্ট সরকার তাকে গৃহবন্দি করে রেখেছ।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক দেশ যখন নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন চাচ্ছে, তখন সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে যাচ্ছে। কীসের সংবিধান, যেটা তোমরা কাটাছেঁড়া করে শেষ করে দিয়েছ।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি টিম এসেছিল, দেশে নির্বাচনের ব্যবস্থা কেমন দেখতে, তারা দেশের রাজনীতিবিদ, কূটনৈতিক, পত্রিকার সম্পাদক ও জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে বসেছিল। তারা বলেছিল— দেশে গিয়ে বলব, এ দেশে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক টিম পাঠাব কি না। তারা কী বলেছে? তারা বলেছে, বাংলাদেশে নির্বাচনের পরিবেশ নেই। তাই, তারা পর্যবেক্ষক টিম পাঠাবে না। আর নির্বাচন কমিশনের নির্লজ্জ সচিব বলে বাজেট ঘাটতির কারণে নাকি তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাবে না।’
তিনি বলেন, ‘একথা বিশ্বের সবাই জানে, এমনকি জাতীয় পার্টিও বলেছে- যদি সরকার পদত্যাগ না করে তবে এ দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হলে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। আন্দোলন, আন্দোলন ও আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এ সরকারকে পরাজিত করতে হবে। একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মা-বোনেরা জেগেছে, তারা এ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চান না। দয়া করে সংসদ বিলুপ্ত করে নির্বাচন দিন।’
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।’