একদিন আগেও যার সব ছিল, এখন তার কেউই নেই এ পৃথিবীতে। অবশ্য এই অভাব বোঝারও যে বয়স হয়নি তার। কপালের জোরেই বেঁচে আছে সে। এই হতভাগা আট মাস বয়সী শিশুটির নাম হোসাইন।
বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় যে প্রবল বৃষ্টি হয়, তাতে ডুবে যায় অনেক রাস্তা, অনেক এলাকা। এর মধ্যে ডুবে যাওয়া একটি এলাকা ছিল মিরপুরে কমার্স কলেজসংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তির বিপরীত পাশের এলাকাটি।
রাত ৯টার দিকে মিজান, তার স্ত্রী মুক্তা ও সাত বছরের মেয়ে লিমা বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান সেখানে। মিজানের পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছেন একই এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ অনিক।
এতে আহত হলেও প্রাণে যায় ওই দম্পতির ছেলে শিশু হোসাইন। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেন শিশুটির বাবা-মায়ের প্রতিবেশী আমেনা খাতুন ও তৃতীয় লিঙ্গের বৃষ্টি আক্তার।
শিশু হোসাইনকে বৃষ্টির পানি থেকে তুলে আনার ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যেগাাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে শিশুটি যখন হাবুডুবু খাচ্ছিল, তখন এ দৃশ্য দেখে এক যুবক তার পা ধরে টেনে তোলেন।
ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার ভোর চারটার দিকে শিশুটি সুস্থ হওয়ার শিশু ওয়ার্ড থেকে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র দেয়া হয় তাকে।
প্রতিবেশী আমেনা খাতুন ও বৃষ্টি আক্তার তারা জানান, নানার বাড়ি থেক নিজ বাসায় ফেরার পথে এ বৃষ্টির কবলে পড়ে হোসাইন ও তার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু ঘরে আর পৌঁছাতে পারেনি তারা। বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান শিশুর মা, বাবা ও বোন।
ঢামেক পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, শিশু হোসাইনকে নিয়ে আসার পর শিশু ওয়ার্ডে দীর্ঘক্ষণ ছটফট করছিল সে। সে সুস্থ হয়েছে। সুস্থ হওয়ায় শিশুটিকে ছাড়পত্র দেয়া হয়।