কুমিল্লার দাউদকান্দিতে অস্ত্র ঠেকিয়ে পৌনে দুই কাটি টাকা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনার দিনই দাউদকান্দি উপজেলা প্রজন্মলীগ সভাপতি সোহেল রানাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কুমিল্লা সদর উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে এই মামলা করেন।
সোহেলের বাড়ি থেকে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা উদ্ধার করা গেলেও বাকি ৬৮ লাখ টাকার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কোনো আসামিকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, দাউদকান্দি সদরে মহাসড়কে ছিনতাই-চাঁদাবাজির কারণে সোহেলের ওপর অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। অবৈধ গ্যাস সংযাগ দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। প্রভাবশালীদর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলে না। বিভিন্ন মামলা থাকলেও পুলিশ তার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।
ছিনতাইয়ের শিকার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি মালদ্বীপ প্রবাসী। কুমিল্লা শহরে আমার একটি জমি ছিল। জমিটি এক কোটি ৭০ লাখ টাকায় বিক্রি করে টাকা নিয়ে প্রাইভেট কারে করে ঢাকা থেকে ফিরছিলাম। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে যাওয়ার পথে ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার মোহন সিন্ডিকেট পেট্রোল পাম্পে প্রাইভেট কারটি থামালে সেখানে অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেন ছিনতাইকারীরা। আমি ঘটনাটি পুলিশকে জানালে দাউদকান্দি থানা পুলিশ পাম্পে এসে আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’
স্থানীয় সূত্রে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, উপজলা প্রজন্মলীগ সভাপতি সোহেল রানার নেতৃত্বে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সোমবার বিকেলে দাউদকান্দি থানা পুলিশ সোহেলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা উদ্ধারও করে।
ভুক্তভোগী সাইফুল বলেন, ‘আমি এখনও আতঙ্কে রয়েছি। এমন ভয়াবহ ঘটনার সম্মুখীন আগে কখনও হইনি। সোহেলের বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের খবর সোমবার পুলিশ আমাকে জানিয়েছে। এরপর আর কোনো আপডেট আমাকে এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি।’
দাউদকান্দি থানার ওসি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ছিনতাই হওয়া টাকার মধ্যে আমরা ১ কোটি ৮ লাখ টাকা সোহেল রানার বাসা থেকে উদ্ধার করেছি। আমাদের অভিযান চলছে। আশা করি, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সোহলেসহ অন্যান্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে পারব।’
সোহেলের আগের অপরাধ ও মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই থানায় কিছুদিন আগে যোগদান করেছি। এখন অভিযান নিয়ে ব্যস্ত আছি। আগের মামলার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বলতে পারব।’