আজ রোববার, ৪ সেপ্টেম্বর। নবরূপে আত্মপ্রকাশের দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পণ করল ‘দৈনিক বাংলা’।
ইতিহাসে ফিরে তাকালে দেখা যায়, ষাটের দশকে বাঙালি জাতি যখন তার স্বাধিকার আন্দোলনে উজ্জীবিত, সে সময় সংবাদপত্রটি প্রথম প্রকাশিত হয়। তারিখটি ছিল ১৯৬৪ সালের ৬ নভেম্বর।
প্রেস ট্রাস্ট অফ পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত পত্রিকাটির তৎকালীন নাম ছিল ‘দৈনিক পাকিস্তান’। আগুনঝরা সেসব দিনে জাতির আন্দোলন-সংগ্রামের খবর গুরুত্বসহকারে প্রচার করে এই সংবাদমাধ্যম।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বীর বাঙালি ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীন দেশে এই পত্রিকা প্রথমে প্রকাশিত হয় ‘দৈনিক বাংলাদেশ’ নামে। পরে এর নাম রাখা হয় ‘দৈনিক বাংলা’।
পাঠকের হাতে প্রথমবার যাওয়ার পর থেকেই দৈনিক বাংলা বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। জাতীয়, রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনোদন, খেলাধুলা, ফিচারসহ দেশ-বিদেশের খবরাখবরে সাজানো চমৎকার মেকআপ আর পরিচ্ছন্ন মুদ্রণ পত্রিকাটিকে একটি ‘ব্র্যান্ড’ পরিচিতি এনে দেয়।
তিলোত্তমা ঢাকায় একটি ব্যস্ততম মোড়ও নাম পেয়ে যায় ‘দৈনিক বাংলা’র নামে। পুরানা পল্টন ও মতিঝিল এলাকার মাঝামাঝি এই মোড় সেই ইতিহাসকেই স্মরণ করিয়ে দেয় আজও।
২০২২ সালের এই দিনে দৈনিক বাংলা পাঠকের কাছে হাজির হয় পুরোপুরি নতুন আঙ্গিকে। বর্ণিল কলেবরের এই পত্রিকা তার ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় যেমন তুলে ধরছে পাঠকের চাহিদার বাছাই করা খবর; তেমনি প্রচার করছে ব্যবসা-বাণিজ্যে, স্বাস্থ্য-শিক্ষায় বদলে যাওয়া বাংলাদেশের সম্ভাবনার গল্প।
তথ্য-প্রযুক্তির হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্মার্ট পাঠকের কাছে পৌঁছাতে দৈনিক বাংলা বিচরণ করছে ডিজিটাল দুনিয়ায়ও। এই পত্রিকা তার সব খবর প্রকাশ করছে ‘দৈনিক বাংলা.কম.বিডি’ (https://www.dainikbangla.com.bd/) পোর্টাল এবং ফেসবুক-ইউটিউব-এক্স (টুইটার), ইনস্টাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায়ও। ফলে পাঠক যেমন চিরায়ত অভ্যাসে সকালে ঘুম থেকে উঠে ঝকঝকে-তকতকে নতুন পত্রিকায় আগের দিনের আলোচিত সব খবর পড়তে পারছেন, তেমনি স্মার্ট ডিভাইসের পাঠকরাও তাৎক্ষণিক সব খবর পেয়ে যাচ্ছেন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকা অনলাইন পোর্টালে।
একটি সংবাদপত্রের মূলশক্তি তার পাঠক। আরও স্পষ্ট করে বললে জনগণ। দীর্ঘ পথচলায় দৈনিক বাংলা বরাবরই জনগণের পক্ষে থেকেছে। জনগণের মুক্তির সংগ্রামে লড়েছে একতাবদ্ধ হয়ে। জনগণ যে চেতনায় বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে, সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে দৈনিক বাংলা আপসহীন ছিল, আছে এবং থাকবে।
পাঠকের পাশাপাশি সংবাদপত্রের সাহস ও অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেন লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, হকার, এজেন্টসহ শুভানুধ্যায়ীরা। দৈনিক বাংলা আজ পর্যন্ত সর্বস্তরের শুভানুধ্যায়ীর অপরিসীম সাহস, হিমালয়সম অনুপ্রেরণা ও আকাশছোঁয়া ভালোবাসা পেয়েছে।
শুভানুধ্যায়ীদের সীমাহীন ভালোবাসাকে পুঁজি করে ইতিহাসকে অন্তস্থলে ধারণ করে দৈনিক বাংলা এগিয়ে যাবে ভবিষ্যতের পথে। এই অগ্রযাত্রায় যারা ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন, তাদের সবার প্রতি আমাদের অসীম কৃতজ্ঞতা ও অতল শ্রদ্ধা। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই মাহেন্দ্রক্ষণে আপনাদের হৃদয় নিংড়ানো অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দৈনিক বাংলা