শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ফরম পূরণের ক্ষেত্রে অভিভাবক কলামে ‘বাবা’ অথবা ‘মা’ কিংবা আইনগত অভিভাবকের নাম সংযোজনে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট।
এ রায়ের ফলে তিন জনের কোনো একজনের নাম দিয়ে ফরম পুরণ করা যাবে। এর রায়ের আলোকে সকল ফর্ম সংশোধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সকল শিক্ষাবোর্ডকে নির্দেশনা দিয়েছে হাইকোর্ট।
বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে রিটকারী সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট।
চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
তখন আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা, আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম এবং আইনজীবী আয়েশা আক্তার। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
সেসময় রায়ের পর আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা জানিয়েছিলেন, ‘আগে যেখানে বাবা ছিল সেখানে হাইকোর্ট রায় দিলেন বাবা অথবা মা অথবা আইনগত অভিভাবক, যেকোনো একজনের নাম দিয়ে ফরম পূরণ করা যাবে।’
২০০৭ সালের ২৮ মার্চ একটি দৈনিক পত্রিকায় ‘বাবার পরিচয় নেই, বন্ধ হলো মেয়ের লেখাপড়া’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
ওই প্রতিবেদনে ঠাকুরগাঁওয়ের এক শিক্ষার্থীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘আমার মা আমাকে বলেছেন, আমার বাবা কে। তারপরও আমি বাবার নামটি রেজিস্ট্রশন ফরমে লিখতে পারিনি। কারণ ওই লোকটি আমার মা ও আমাকে স্বীকৃতি দেয়নি। আমাকে সবাই বলেছিল, চুপ করে ওই লোকটির নাম লিখে দিতে। আমি লিখিনি। আমার রেজিস্ট্রেশন কার্ডও আসেনি। এরপর অ্যাডমিট কার্ডও এলো না। আমি এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারলাম না।’
এই প্রতিবেদন যুক্ত করে রেজিস্ট্রেশন কার্ড না দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও নারীপক্ষ হাইকোর্টে রিট করে। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০০৯ সালের ১ আগস্ট রুল জারি করেন বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি হয় চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি। রুলের ওপর শুনানি শেষে রায়ের জন্য ২৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। সে অনুসারে রায় দেয়া হয়। এরপর বুধবার (৩০ আগস্ট) পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হলো।