কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যা মামলায় বৃহস্পতিবার তার খালাতো বোন লাইজু জাহানের সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়েছে।
তনুর বাবা-মা ও ভাইসহ লাইজু জাহান কুমিল্লা পিবিআই কার্যালয়ে নির্ধারিত সময় হাজির হলে তারা জানতে পারেন, তদন্ত কর্মকর্তা অসুস্থ হওয়ায় আপাতত হচ্ছে না সাক্ষ্যগ্রহণ।
মামলায় সাক্ষ্য দিতে লাইজু সিলেটে তার স্বামীর বাড়ি থেকে এক দিন আগে কুমিল্লায় পৌঁছান। নির্ধারিত সময়ে লাইজু, তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম ও তনুর ছোট ভাই রোবেল হোসেন কুমিল্লার হাউজিং এস্টেট এলাকায় পিবিআই অফিসে পৌঁছান। পরে তাদের জানানো হয় তদন্ত কর্মকর্তা অসুস্থ। তাই সাক্ষ্য নেয়া হবে না।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তনুর বাবা বলেন, ‘সাত বছরে আর কত সাক্ষ্য দিতাম? যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে রহস্য বের হতো, তাদেরকেই এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না।
‘আমার পরিবারের প্রতিটি সদস্য ও আত্মীয়স্বজন, এমনকি শিক্ষকও সাক্ষ্য দিয়েছেন। আর কী বাকি রইল?’
তিনি আরও বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত বলে সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়েছে। এক দিন আগে আমাদের মোবাইলে তা জানিয়ে দিলে হতো। এটা হয়রানি ছাড়া আর কিছুই না।’
কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি জঙ্গল থেকে ২০১৬ সালের ২০ মার্চ তনুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সেই থেকে এ হত্যা রহস্যের জট খোলেনি।
মরদেহ উদ্ধারের পরের দিন তনুর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে হত্যা মামলা করেন।
ওই বছরের ৩০ মার্চ তনুর লাশ কবর থেকে তুলে দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তে মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা যায়নি।
মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পর ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সর্বশেষ ২০২০ সালের নভেম্বরে কুমিল্লা সিআইডি থেকে মামলার ডকেট পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকায় হস্তান্তর হয়।
তদন্ত সংস্থাগুলো সূত্রে জানা যায়, এরই মধ্যে কয়েকজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে নমুনার প্রোফাইলিংয়ের কাজ হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমি জ্বরে আক্রান্ত। ধারণা করা হচ্ছে ডেঙ্গু সংক্রমণ।
‘মামলাটি অধিক গুরুত্ব দিয়ে আমরা আন্তরিকভাবে তদন্ত করছি। সুস্থ হওয়ার পর লাইজু জাহানের সাক্ষ্য নেয়া হবে।’