রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর মমিনবাগ এলাকা থেকে ট্রেন দেখানোর কথা বলে চার বছরের শিশু সালমানকে অপহরণের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
তারা হলেন মো. শাফায়েত হোসেন আবির ও মো. আল আমিন।
আরও দুজনের বিরুদ্ধে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তারা হলেন মো. হেলাল ও মো. আইয়ুব।
র্যাব জানায়, অপহরণের পর দিন রোববার অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ভুক্তভোগী পরিবারকে ফোন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় অপর দুজন পালিয়ে যান।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘অপহৃত শিশুকে চট্টগ্রাম মহানগরীর সদরঘাট এলাকা থেকে উদ্ধার করে র্যাব-১০। অপহরণ চক্রের হোতা শাফায়েত হোসেন আবির ও আল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
কমান্ডার মঈন জানান, সোমবার রাতে র্যাব-৭ ও ১০-এর একটি দল তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা এবং ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের সদরঘাট আইস ফ্যাক্টরি রোড এলাকায় যৌথ অভিযান চালায়।
গ্রেপ্তার হওয়া শাফায়েত ও আল আমিন শিশু সালমানদের পাশের বাসার ভাড়াটিয়া। তারা আগে থেকেই অপহরণের পরিকল্পনা করেন। শিশুটির বাবা হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে গেলে অপহরণের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী আল আমিন শিশু সালমানকে বিভিন্ন সময় চিপস্, চকলেট, খেলনা কিনে দিয়ে তার সঙ্গে সখ্যতা এবং বিশ্বস্ততা অর্জন করেন। গত ১৫ জুলাই বাসার সামনে খেলছিল শিশুটি। সুযোগ বুঝে আল আমিন তাকে অপহরণ করে কামরাঙ্গীরচরের মাদবর বাজার এলাকায় আল আমিনের অপর সহযোগী হেলালের কাছে নিয়ে যান।
র্যাব আরও জানায়, পরে হেলাল শিশুটিকে চট্টগ্রামে নিয়ে যান। শাফায়েত ও আল আমিনকে চট্টগ্রামে যেতে বলেন। চট্টগ্রামে গিয়ে হেলালের পরিচিত আইয়ুবের বাসায় সালমানকে রাখা হয়।
এরপর অভিযুক্তরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অপহরণের বিষয়টি জানান। এ সময় ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। শিশুটির পরিবার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাদের পাঁচ হাজার টাকা দেয়।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘এক পর্যায়ে অপহরণকারীরা পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে সালমানকে ফেরত দিতে রাজি হন। মুক্তিপণের টাকা নিয়ে চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় আসতে বলেন অপহরণকারীরা।’
র্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘শিশুটির পরিবার মুক্তিপণের টাকা নিয়ে আসতে দেরি করায় অবস্থান পরিবর্তন করে আল আমিন ও শাফায়েত সালমানকে সঙ্গে নিয়ে ট্রেনে করে ফেনী-চট্টগ্রাম যাতায়াত করেন। অপহরণকারী শাফায়েত ও আল আমিন শিশু সালমানকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে আইয়ুবের কাছে রেখে মুক্তিপণের টাকা নেয়ার জন্য চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় যান। এ সময় র্যাব তাদের গ্রেপ্তার করে।’
তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী শিশুটিকে উদ্ধারে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় পৌঁছালে আইয়ুব র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান।