ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে এবং কাজ ছেড়ে রাস্তায় নেমে সরকারের পতন ঘণ্টা বাজাতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, রাস্তায় নেমে জনগণের শক্তি দিয়েই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।
শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপিপন্থি পেশাজীবীদের এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান। সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তরুণ, পেশাজীবী, মেহনতি মানুষ জেগে উঠেছে। এখন আপনাদের (পেশাজীবী) জেগে উঠতে হবে, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। তাই সবাই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসুন, কাজ ছেড়ে রাস্তায় নামুন। মানুষকেও রাস্তায় নামতে উদ্বুদ্ধ করুন। আর রাস্তায় নেমে জনগণের শক্তি দিয়েই আমরা এদের পরাজিত করবো।’
তিনি বলেন, সবাই জেগে উঠেছে। আমি শুক্রবার নোয়াখালীতে মানুষের ঢল দেখেছি। শ্রমিক, কৃষক ও মেহনতি মানুষের ঢল। এটা বিএনপির মিটিং ছিল না। এটা ছিল কৃষকদের সমাবেশ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কয়েক দিন আগে হুমকি দিয়েছে, ২০১৩ সালের মামলাগুলো আবার শুরু করা হবে। সবাইকেই শাস্তি দেওয়া হবে। আইন মন্ত্রণালয় থেকে জেলা পর্যায়ের বিচারকদের বলা হয়েছে যে, মামলা দু মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। দ্রুত বিএনপির যারা নেতা আছেন, যারা নির্বাচন করতে পারেন, তাদের সাজা দিয়ে ভেতরে ঢোকাতে হবে। এদের সঙ্গে আপস? এদের অধীনে নির্বাচন?’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন সবচেয়ে বেশি অসহায় বোধ করি ওই বিচারব্যবস্থার কাছে। সবচেয়ে বেশি অসহায় বোধ করি, যখন আমরা কোর্টে যাই। কারণ আমরা সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘যে কোনো পরিবর্তন, সমাজের পরিবর্তন, রাষ্ট্রের পরিবর্তন; কখনো সম্পূর্ণ হয় না যতক্ষণ পর্যন্ত না তার পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবীরা সামনে এগিয়ে আসেন। এটা হচ্ছে ইতিহাস। যে কোনো আন্দোলনে, মৌলিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বুদ্ধিজীবীরাই সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছেন এবং নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছেন। আমরা যে কথাটা বলতে চাচ্ছি, আপনাদের বুদ্ধীজীবী ও পেশাজীবীদের ভূমিকা গোটা জাতি দেখতে চায়। গোটা জাতি আপনাদের কথা শোনে।’
পেশাজীবী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। সঞ্চালনা করেন বিএসপিপির সদস্যসচিব সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী। সমাবেশে আরো মধ্যে বক্তব্য দেন বিএসপিপির আহ্বায়ক ডা. জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, কবি আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে থেকে একটি নীরব পদযাত্রা বের করা হয়। পদযাত্রাটি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এতে আইনজীবী, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষিবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষক, কবি-সাহিত্যিকসহ বিভিন্ন পেশার নেতারা অংশ নেন।