রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সবজায়গাতেই প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগী বেড়ে চলেছে। এর মধ্যে একদিনে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ডেঙ্গু নিয়ে শতাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়েছে আতংক।
শুক্রবার সকাল আটটা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বরিশালসহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে একদিনে ১১০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের উপপরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল।
তিনি জানান, আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল জানান, আক্রান্তদের মধ্যে শুধু শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪৭ জন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৩ জন। এ ছাড়া বরিশাল জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ৯ জন, পিরোজপুর জেলায় ১০ জন, বরগুনায় ১৩ জন ও ভোলায় ৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়লে স্বাভাবিকভাবে বরিশালেও বাড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, ঢাকায় আক্রান্ত হয়ে এখানে আসায় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।’
তাই সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের বর্তমান পরিচালকের দায়িত্বে থাকা এ কর্মকর্তা।
এদিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চাপ সামলাতে করোনা ইউনিটের মতো আলাদা ‘ডেঙ্গু ইউনিট’ চালু করেছে শেবাচিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, “হাসপাতালের নতুন ভবনের নিচতলায় (কোভিড ভবন) পুরুষ ও নারী ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা দুটি ইউনিট চালু করা হয়েছে। এ ইউনিটে রোগী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
“হাসপাতালের সকল ইউনিটের প্রধানগণ, সহকারী রেজিষ্ট্রার ও নার্স ইন-চার্জদের তাদের স্ব স্ব ইউনিটে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীদের ‘ডেঙ্গু ইউনিটে’ স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যে ইউনিটের রোগী সেই ইউনিটের চিকিৎসক ও নার্সরা রোগীদের সেবা প্রদান করবেন।”
পরিচালক বলেন, ‘ডেঙ্গু কর্নারে পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে মোট ৮০ জন রোগী একসঙ্গে সেবা নিতে পারবে। রোগীদের জন্য মশারি, পরীক্ষাসহ সব ধরনের ব্যবস্থা সেখানে রয়েছে।’
ডেঙ্গু চিকিৎসায় শেবাচিম হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্সদের কোনো সংকট নেই বলে জানান তিনি।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেয়া পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বরিশালে এবছর এখন পর্যন্ত মোট ৯২২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৭৩১ জন চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ১৯১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে একজনের।