বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

উইঘুর মুসলিমদের অত্যাচারের প্রতিবাদে পঞ্চগড়ে মানববন্ধন

  • প্রতিনিধি, পঞ্চগড়   
  • ৫ জুলাই, ২০২৩ ২৩:২৭

মানবন্ধনে আটক দশ লাখ উইঘুর পুরুষকে বন্দিশালা থেকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য চীন সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়। উইঘুর মুসলিমদের ওপর অত্যচার বন্ধ করে তাদের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার পথ তৈরি করে দিতে দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের ওপর বর্বরোচিত হামলা, আটক, জাতীগত নিধন ও অত্যাচারের প্রতিবাদে পঞ্চগড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

বুধবার পঞ্চগড় সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

৫ জুলাই উইঘুরদের ‘উইকমিরি ম্যসাকার’ দিবস উপলক্ষে এ কর্মসূচির আয়োজন করে সংগঠনটি।

মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিবাদ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।

মানবন্ধনে আটক দশ লাখ উইঘুর পুরুষকে বন্দিশালা থেকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য চীন সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়। উইঘুর মুসলিমদের ওপর অত্যচার বন্ধ করে তাদের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার পথ তৈরি করে দিতে দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।

মানববন্ধনে বলা হয়, ২০০৯ সালের ৫ জুলাই উইঘুর মুসলিমরা তাদের স্বদেশের রাজধানী উরুমকিতে চীনা দখলদার সেনাবাহিনী ও তার ঔপনিবেশিক হান জনগোষ্ঠির দ্বারা নির্মমভাবে গণহত্যার শিকার হয়। যৌথ ওই হামলায় দুই হাজারের বেশি উইঘুর নারী-পুরুষ নিহত হয়। পরবর্তী এক সপ্তাহজুড়ে রাষ্ট্রীয় সাহায্যপুষ্ট হান জনগোষ্ঠী পিটিয়ে কুপিয়ে আরও কয়েক হাজার উইঘুর নাগরিককে হত্যা করে। চীনা মিডিয়া ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বিষয়টি গোপন রাখা হলে পরবর্তীতে এ খবর দেশের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে।

আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৭ হাজারের কাছাকাছি উল্লেখ করা হয়। বিশ্বজুড়ে উইঘুর প্রবাসীরা প্রতি বছর দিবসটি স্মরণে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমের আয়োজন করে। তাদের সঙ্গে গত বছরগুলোতে যুক্ত হয়েছে বিশ্বের মানবতাকামী মানুষেরা।

বক্তারা বলেন, ‘গত ৭ বছর ধরে কারিগরি শিক্ষা দেয়ার নামে উইঘুর পুরুষদের পরিবার থেকে আলাদা করে জেলে বন্দি করে অত্যাচার চালোনো হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকে জেলখানায় মৃত্যুবরণ করেছেন। অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ দিতে হবে।

‘প্রতিটি মানুষের ইতিহাস উদযাপন বা স্মরণ করার জন্য বিশেষ দিন রয়েছে। জনগণ হিসেবে চীনা উইঘুর মুসলিমদের উদযাপন বা মনে রাখার মতোও অনেক বিশেষ দিন রয়েছে। ৫ জুলাই তার মধ্যে অন্যতম মর্মান্তিক একটি দিন। বিশ্বজুড়ে এদিনটি ‘উরুমকি ম্যসাকার’ দিবস হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।’

তারা আরও বলেন, ‘উইঘুর মুসলিমদের নামাজ-রোজা করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। মসজিদে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। রোজা না রাখতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। মুসলিম এলাকাগুলোতে শুকর-কেন্দ্রিক ব্র্যান্ডিং করা হচ্ছে। ধর্মীয় শিক্ষায় বাধা প্রদান করা হচ্ছে। মসজিদ ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এসব অত্যাচার করে আদতে কোনো লাভ নেই। এতে উইঘুরদের মধ্যে প্রতিশোধ স্পৃহা তৈরি হবে।

‘মুসলিম হিসেবে পরিবারের মধ্যে যাতে বেড়ে উঠতে না পারে সেজন্য উইঘুর এলাকার সন্তানদের তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে কৌশলে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হচ্ছে। গর্ভপাত না ঘটালে উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু নারীদের বন্দিশিবিরে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে।

‘যেসব নারীর সন্তান সংখ্যা দুইয়ের বেশি, তাদের জরায়ুতে জোর করে জন্মনিয়ন্ত্রণ ডিভাইস প্রতিস্থাপনের আইনি বৈধতা দেয়া হয়েছে। অনেককে অপারেশনের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বন্ধ্যা করা হচ্ছে। এ ছাড়া যেসব নারীর সন্তান সংখ্যা দুইয়ের বেশি, তাদের বড় অংকের জরিমানা করা হচ্ছে।’

এসময় উইঘুর নারীদের প্রতি যৌন নির্যাতন বন্ধের আহবান জানান তারা।

মানববন্ধনে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন পঞ্চগড় জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম জুয়েল, প্রবীন সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম শহীদ, দিশারী নাট্যগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, কলামিস্ট মাহমুদ হোসেন সুমন, তরুণ সমাজকর্মী সাইফুল ইসলাম শান্তি, শ্রমিক নেতা রাশেদুজ্জামান রাশেদ, ছাত্রনেতা আরিফুল ইসলাম ইরান, সাংবাদিক ইনসান সাগরেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মানববন্ধনে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মী, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।

এ বিভাগের আরো খবর