প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠত সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলো প্রমাণ করেছে যে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু হতে পারে, যেখানে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোট দিতে পারে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র রাজশাহীর এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সিলেটের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে শপথবাক্য পাঠ করানোর সময় তিনি এ কথা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একের পর এক সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকার কারণে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোট দিচ্ছে। আমরা প্রমাণ করেছি, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে।’
জনসাধারণকে সেবা দিয়ে তাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার শুধু নগরীতে নয়, তৃণমূলেও উন্নয়ন নিশ্চিত করাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীকে আধুনিক, সুন্দর ও পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য রাজশাহী সিটি মেয়রকে ধন্যবাদ জানান। নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখুন।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘বর্তমান সরকার সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত চক্র সন্ত্রাস ও দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে।
‘বিএনপি সরকার বাংলাদেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছিল। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ভোটাধিকারও কেড়ে নেয়া হয়েছিল।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ প্রত্যক্ষ করেছিল যখন বঙ্গবন্ধু তৎকালীন মহকুমাগুলোকে জেলায় পরিণত করেছিলেন এবং জেলাগুলোর সার্বিক উন্নয়ন তদারকি করার জন্য জেলা গভর্নর নিয়োগ করেছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী ও সিলেটের আরও উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে নিরক্ষরতা ও বেকারত্ব দূর করতে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘সরকার গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বিনামূল্যে ঘর দিচ্ছে। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের দেশে কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না।’
পরে সাধারণ ওয়ার্ডের ৭৬ জন নবনির্বাচিত কাউন্সিলর এবং দুই সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলররাও একই স্থানে শপথ নেন। তাদের মধ্যে রাজশাহীর ৪০ জন এবং সিলেটের ৩৬ জন কাউন্সিলর রয়েছেন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করান। শপথ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম। এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
২১ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ১,৬০,২৯০ ভোট পেয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. মুর্শিদ আলমকে পরাজিত করেন, যিনি পান ১৩,৪৮৩ ভোট।
একই দিনে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ১,১৮,৬১৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবু পান ৫০,৩২১ ভোট।