সিলেটে কয়েক দিন ধরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। এতে নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে গেছে।
রোববার নগরের বেশিরভাগ সড়কই ছিল পানির নিচে। এ ছাড়া কিছু এলাকায় বসতঘরেও ঢুকেছে পানি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আরও পাঁচ দিন সিলেটে ভারী বৃষ্টি থাকবে। এ পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের মধ্যে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এদিকে বৃষ্টিতে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। তবে এখনও কোথাও নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।
সরেজমিন দেখা গেছে, সিলেট নগরের জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা এলাকার সড়ক থেকে শুরু করে মদিনা মার্কেট, আখালিয়া, সুবিদবাজার, জালালাবাদ, হযরত শাহজালাল (র.) মাজার এলাকার পায়রা ও রাজারগল্লি, বারুতখানা, হাওয়াপাড়া, দাড়িয়াপাড়া, যতরপুর, উপশহর, ছড়ারপাড়, তালতলাসহ বেশ কিছু এলাকা জলাবদ্ধ।
উপশহর, তেররতন, শাহী ঈদগাহ, জামতলা, মনিপুরী রাজবাড়ি, কানিশাইল, ঘাসিটুলায় বাসা-বাড়ি ও দোকানে পানি প্রবেশ করেছে।
এর আগে জুনের মাঝামাঝিতে বৃষ্টিতেও জলাবদ্ধতা দেখা দেয় সিলেট নগরে। ভারী বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে।
নগরের উপশহর এলাকার বাসিন্দা সাইদ আহমদ বলেন, ‘বৃষ্টি হলেই আমরা আতংকে থাকি। কখন বাসার ভেতরে পানি ঢুকে যাবে। একটু বৃষ্টি হলেই এ সমস্যা পোহাতে হয়। এ থেকে কিছুতেই নিস্তার মিলছে না।’
নগরের তালতলা এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম বলেন, ‘জলবদ্ধতার কষ্ট তো আছেই, কিন্তু যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে বন্যা হয় কি না এ আতংকে আছি। গত বছরের বন্যার ক্ষতিই এ পর্যন্ত কাটিয়ে উঠতে পারিনি।’
নগরের পাঠানটুলা এলাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক সাগর হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টি শুরুর কিছুক্ষণ পরেই সড়কে পানি জমে যায়। এর মধ্যে গাড়িতে যাত্রী নিয়ে আসার সময় ইঞ্জিন হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেছে। পরে যাত্রী নামিয়ে গাড়ি ঠেলে নিয়ে আসতে হয়েছে। নগরের অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। বৃষ্টি হলেই এ সমস্যায় পড়তে হয়।’
ঈদের ছুটি শেষে রোববার খুলেছে অফিস-আদালত। তবে অফিস খোলার প্রথমদিই বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে। এতে নগরের যান চলাচলও ছিল অপেক্ষাকৃত কম।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন জানান, শনিবার ভোর ৬টা থেকে রোববার ভোর ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়া রোববার ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২২ মিলিমিটার ও দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী পাঁচ দিন সিলেটে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বৃষ্টি ও ঢলের কারণে সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারাসহ প্রধান নদীগুলোর পানি বাড়ছে। তবে পানি এখন পর্যন্ত বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।
জলাবদ্ধতার ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, ‘আজ সিলেটে মাত্র তিন ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এ পরিমাণ বৃষ্টির পানি নামতে একটু সময় লাগে। তাই সামান্য সময়ের জন্য কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়েছে। তবে বৃষ্টি থামার পর পানি নেমে গেছে।’