ভয়াবহ আগুন, ঘূর্ণিঝড়সহ যে কোনো দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় জীবন বাজি রেখে কাজ করে ফায়ার সার্ভিস। সারা বছরের রুটিন কাজের পাশাপাশি ঈদে নানা ধরনের দুর্ঘটনার জন্য তাদের অতিরিক্ত সতর্ক ও প্রস্তুত থাকতে হয়। এবারও ঈদকে কেন্দ্র করে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে সরব থাকবেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
২৯ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে দেশে। এর আগেই প্রস্তুতি নিচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। ঈদে বাহিনীটির জনবলের বড় অংশ ছুটি কাটাতে পারে না স্বাভাবিকভাবে, এবারও তাদের মোট জনবলকে তিন ভাগ করে এক ভাগ ছুটি কাটাবে; বাকি অংশ থাকবে দায়িত্বে।
ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা জোনের উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের দৈনন্দিন যে কাজ, সেটা রুটিন মাফিক চলবে। কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। আমাদের মোট জনবলকে আমরা ঈদের জন্য তিন ভাগ করেছি। এর মধ্যে এক ভাগ যাবে ঈদের ছুটি কাটাতে।
‘এই এক ভাগ জনবল ছুটি কাটিয়ে ফেরার পরে আরেক ভাগ যাবে ছুটি কাটাতে। তারা ফিরে আসলে সর্বশেষ জনবল যাবে ছুটি কাটাতে। অর্থাৎ ঈদের সময়ে আমাদের মোট জনবলের এক ভাগ ছুটিতে থাকবে। বাকিরা ডিউটি করবে। এই নিয়মই সারা দেশের ষ্টেশনগুলোতে।’
তিনি বলেন, ‘ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের দৈনন্দিন রুটিন মাফিক কাজের বাইরে সারা দেশের লঞ্চ ঘাট, লঞ্চ টার্মিনাল, হাইওয়েতে ডিউটি করতে হচ্ছে। এছাড়া গরুর হাটগুলোর আশেপাশের ষ্টেশনগুলো এলার্ট রাখা হয়েছে। কেউ গরু কিনতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস দেবে। ঈদকে কেন্দ্র করে আমরা প্রস্তুত আছি। দেশের মানুষের যে কোন বিপদে আমরা পাশে আছি।’
ফায়ার সার্ভিসে রয়েছে জনবল সংকট। তবে যে জনবল রয়েছে তাদের নিয়েই ঈদে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা সরব থাকবে তারা।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, ‘আমাদের সবাই যে সব সময় ডিউটিতে থাকে তা নয়। একটা স্টেশনের দুই ভাগ জনবল ডিউটিতে থাকে। বাকি ভাগ স্টানবাই থাকে। বড় আগুন হলে তারা যাবে, অন্যথায় তারা রেস্টে থাকবে।
‘তবে তাদেরও ব্যারাকের ভেতরেই থাকতে হয়। ঈদে ব্যারাকে যারা রেস্টে ছিল তাদের ছুটি দেয়া হবে। একই নিয়ম সকল স্টেশনে। আমাদের জনবল সংকটের কারণে অনেক সময় তিন ভাগের এক ভাগেরও কম লোক ঈদের ছুটিতে যান।’
তিনি বলেন, 'চিটাগং ও ঢাকা হেডকোয়ার্টারে জনবল পর্যাপ্ত আছে। তাই এখানে তিন ভাগের এক ভাগ জনবলেও বেশি ছুটিতে যায়। এছাড়া অফিসারদের মধ্যে দুই ভাগ করা হয়। এক ভাগ ছুটি কাটান। অন্যরা অফিস করেন। ঈদে প্রশাসনিক অফিস বন্ধ থাকে।’
ঈদ কেন্দ্রিক কী ধরনের সমস্যা বেশি মোকাবেলা করতে হয় জানতে চাইলে শাহজাহান শিকদার বলেন, 'ঈদের সময় দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে যায়। বিশেষ করে রাস্তার দুর্ঘটনার কল বাড়ে। টহল ডিউটির কার্যক্রম বেড়ে যায়। এছাড়া লঞ্চ টার্মিনাল, নদী বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ যায়গায় ডিউটি দিতে হয়।’