ঈদুল আজহার ছুটির আগে শেষ কর্মদিবসে বিকেল থেকে রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বেড়েছে যাত্রীর চাপ।
সোমবার সকাল থেকেই ঢাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এ অবস্থাতে সারাদিন সদরঘাটে যাত্রী কমই ছিল, তবে বিকেলে এখান থেকে নৌপথে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে দক্ষিণাঞ্চলগামী ঘরমুখো মানুষ।
বিকেলের দিকে দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চ ছাড়ার কথা থাকলেও আগেভাগেই ঘাটে চলে আসা যাত্রীরা আশ্রয় নিতে থাকেন লঞ্চগুলোতে। তবে তার সংখ্যাও ছিল বেশ কম।
গত তিন দিন দুপুর থেকে সদরঘাটে যাত্রীর উপস্থিতি বাড়তে থাকলেও বৃষ্টির প্রভাবে এদিন দেখা গেছে কিছুটা ভিন্ন চিত্র।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) সূত্রে জানা যায়, রোববার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে ৮১ টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। আগের দিন শনিবার যার সংখ্যা ছিল ৭১ টি।
সোমবার শেষ কর্মদিবস হওয়ায় সদরঘাট থেকে ৯০-এর বেশি লঞ্চ ছেড়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যাত্রীর চাপ বাড়লে এর সংখ্যা শতাধিকও হতে পারে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিওটিএ।
লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকরা বলছেন, মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে সরকারি ছুটি। এ হিসেবে সোমবার শেষ কর্মদিবস হওয়ায় বিকেলের যাত্রীর চাপ বাড়তে শুরু করবে এটাই স্বাভাবিক। সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হওয়ার ফলেই টার্মিনাল এলাকায় যাত্রীর উপস্থিতি কম বলে জানান তারা।
ঢাকা-চাঁদপুর রুটে সকাল থেকেই নিয়মিত বিরতিতে লঞ্চ চলাচল শুরু হলেও দক্ষিণাঞ্চলের রুটগুলোতে বিকেলে থেকে পুরোদমে লঞ্চ চলাচল করছে বলে জানান তারা।
এদিকে কোনো ঝামেলা ছাড়াই স্বস্থিতে বাড়ি ফিরতে পারছেন বলে জানান ঘাটে আসা নৌপথের যাত্রীরা৷
পটুয়াখালীগামী যাত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, ঘাটে এসেই লঞ্চ পেয়েছি। নিয়মিত ভাড়াই নিয়েছে। আশা করছি ভালোভাবেই বাড়ি পৌঁছাতে পারবো। যাত্রাপথে ঝড় বৃষ্টি না হলেই ভালো হয়।
বিআইডব্লিওটিএ-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সদরঘাট দপ্তরের যুগ্ম পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ‘ঢাকা নদী বন্দর থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে রোববার ৮১ টি লঞ্চ ছেড়ে গিয়েছিল। সোমবার এর সংখ্যা ৯০ এর অধিক হতে পারে।
‘মঙ্গলবার থেকে সরকারি ছুটি শুরু হবে, সেই অনুযায়ী সোমবার শেষ কর্মদিবস হওয়ায় যাত্রীর চাপ বাড়লে এর সংখ্যা শতাধিকও হতে পারে৷ তবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় এখন পর্যন্ত ঘাটে যাত্রীর উপস্থিতি কম। যাত্রীর ভিড় বাড়বে বলে আশা করছি।’
এদিকে ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে গত কয়েকদিনে ঘাটে যাত্রীর চাপ বাড়ায় বাড়ানো হয়েছে দৈনিক চলাচলকারী লঞ্চের সংখ্যা। তাই আগে নিয়মিত চলাচলকারী লঞ্চগুলোর কেবিনের অগ্রিম টিকিট শেষ হয়ে গেলেও লঞ্চ বাড়ায় এখনও টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন যাত্রীরা।
লঞ্চ মালিকরা বলছেন, যাত্রীর চাপ বাড়লে লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো হবে। কয়েকটি রুটে যাত্রীর চাপ থাকলেও ঢাকা-বরিশাল রুটে সেই চাপ কিছুটা কম।
লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব শহিদুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমাদের কিছু লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গিয়েছিল। এখন যেহেতু সেই রুটগুলোতে লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে তাই যাত্রীরা এখনও কেবিনের টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন। যাত্রীর চাপ বাড়লে লঞ্চের সংখ্যাও বাড়ানো হবে। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে লঞ্চ ঘাটেই ভিড়িয়ে রেখেছি।
সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুর রহমান খান বলেন, ‘ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে যাত্রী চাপ ততই বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। আমরা নিরাপত্তার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। স্থল ও নৌ উভয় পথেই পুলিশ ও নৌপুলিশের পাশাপাশি ঘাট এলাকায় র্যাব একটি টিম নিয়োজিত রয়েছে। আনসার সদস্যরাও কাজ করছে।’